
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, নেপালকে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হল। পোস্টে মোট দুটি ছবি রয়েছে যার মধ্যে একটিতে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন লোক ধর্নায় বসে রয়েছে। অন্যটিতে প্রচুর লোক দাড়িয়ে রয়েছে, এটিকেও একটি বিক্ষোভ মিছিলের ছবি মনে হচ্ছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “আজ নেপাল কে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে😍😍😍 পৃথিবীর বুকে এই প্রথম হিন্দু রাষ্ট্র🔥🔥🔥 ধন্যবাদ জানাই তাদেরকে যাদের পরিশ্রমে নেপাল আজ হিন্দু রাষ্ট্র🙏🙏🙏 ——-জয় শ্রীরাম”।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ২০১৫ সালে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ঘোষণা করা হয়েছে এবং সম্প্রতি হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা করার খবরটি ভুয়ো।

তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবিগুলিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে, প্রথম ছবিকে ‘ওয়ার্ল্ড হিন্দু নিউজ’ নামে একটি ওয়েবসাইটের ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদনে ছবিটিকে দেখতে পাই। জানতে পারি, ২০১৫ সালে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ ঘোষণা করার প্রতিবাদে হিন্দু রাষ্ট্রের দাবি করে দিল্লীর জন্তর-মন্তরে বিক্ষোভ দেখায় নেপালিরা। সংবাদমাধ্যম ‘ডেকান ক্রনিকেল’-এর ওয়েবসাইটেও এই প্রতিবাদ সভার ছবি দেখতে পাই।

দ্বিতীয় ছবিটিকে ‘পিপলস রিভিউ’ নামে একটি ওয়েবসাইটের ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখতে পাই। এছাড়া, ২০১৬ সালের একটি ইউটিউব ভিডিওতেও এই ছবিটিকে দেখা যায়।
এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’র একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি ২০১৫ সালের নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২০০৭ সাল পর্যন্ত রাজতন্ত্র পরিচালিত নেপাল বিশ্বের একমাত্র হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত ছিল। ২০১৫ সালে গৃহীত এই সংবিধানে লেখা রয়েছে, “নেপাল এক ধর্মনিরপেক্ষ দেশ।“

আমরা নেপালের ২০১৫ সালে গৃহীত সংবিধান খুঁজে বের করি। দেখতে পাই সেখানে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ বলা হয়েছে।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০১৫ সালে নেপালকে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ ঘোষণা করা হয়েছে।