আমাদের এক পাঠক আমাদের ফ্যাক্টলাইন নম্বর ৯০৪৯০৫৩৭৭০-এ একটি ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাঠিয়েছেন। ভিডিওটি ৩৬ সেকেন্ডের। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওটি পাকিস্তানী হিন্দু মহিলার উপর নির্যাতনের। ভিডিওতে দুইজনকে মহিলাকে নগ্ন অবস্থায় দেখা যায় এবং তাদেরকে ঘিরে অবিচ্ছিন্ন ভাবে চেঁচামেচি করছে জনতার একটি ভিড়। ভিডিওর সাথে আরও দাবি করা হয়েছে যে এটি রোজার মাসের ঘটনা। ভিডিওর মহিলারা তাদের সাথে হওয়া গনধর্ষণের অভিযোগ পুলিশ থানায় করতে যাওয়াই জনগণের ভিড় তাদেরকে নির্বস্ত্র করে রাস্তার মাঝে মারধর করা হয়।

তথ্য যাচাই করে আমরা পেয়েছি ভিডিওটি পাকিস্তানের ঠিকই কিন্তু দাবিগুলো সত্য নয়।

https://twitter.com/GujjetiVinayak/status/1770785151603056871

এক্স পোস্ট এক্স পোস্ট

তথ্য যাচাইঃ

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, ‘নিউজ১৮ হিন্দি’র ১০ ডিসেম্বর,২০২১, তারিখের একটি প্রতিবেদনে এই ভিডিও কেন্দ্রিক তথ্য পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভিডিওর ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের ফায়সালাবাদে। মহিলারা সেখানকার বাজারের একটি বৈদ্যুতিক দোকানে প্রবেশ করে এবং কিছুক্ষণ পর দোকানদার চুরির অভিযোগে তাদের ঘেরাও করে। পরক্ষনেই, লোকের জমায়েত হয় এবং তাদের চোর সন্দেহে নির্বস্ত্র করে মারধর করে।

প্রতিবেদন আর্কাইভ

‘InKhabar Official’-এর ভিডিও উপস্থাপন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে ফায়সালাবাদের বাবা চক মার্কেটে। মহিলারা ছিল আবর্জনা পরিস্কারকারি কর্মী। বাবা চক মার্কেটের একটি বৈদ্যুতিক দোকানে ঢোকে এবং দোকানদারের কাছে জল খাওয়ার আবেদন করে। কিছুক্ষণ পরে চোর সন্দেহে বাজারে লোকের সমাগম ঘটে এবং নগ্ন করে মারধর করা হয়।

সেই মারধরের ঘটনা সামনে আসার পরে পরেই সেই বৈদ্যুতিক দোকানের সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ্যে চলে আসে। বিস্তারিত দেখুনঃ

অন্যান্য সংবাদ প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট হয় যে, ঘটনাটি ঘটেছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এবং চোর সন্দেহে মাঝ রাস্তায় তাদের নির্বস্ত্র করে মারধর করা হয়। মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত হিসেবে চারজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মারধরের ঘটনার সাথে যুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল মিল্লাত থানার পুলিশ।

প্রতিবেদনগুলোর কোথাও মহিলাদের হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলে জানানো হয়নি।

তাছাড়া, ২০২১ সালের রোজার মাস পড়েছিল ইংরেজি ক্যালেন্ডারের এপ্রিল-মে মাসে। অর্থাৎ, ভিডিওর ঘটনাটি রোজার মাসে ঘটেনি এবং ঘটনাটি গনধর্ষণে সাথে জড়িত নয়।

নিষ্কর্ষঃ তথ্যের ভিত্তিতে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, গনধর্ষণের শিকার পাকিস্তানের হিন্দু মহিলারা পুলিশ থানায় অভিযোগ নথিভুক্ত করতে যাওয়াই রাস্তায় নির্বস্ত্র করে মারধর করার দাবিটি মিথ্যা। চুরি অভিযোগে মহিলাদের নির্বস্ত্র করা হয়েছিল।

Avatar

Title:পাকিস্তানী হিন্দু মহিলাকে নগ্ন প্যারেড? জানুন ভিডিওর সত্যতা

Fact Check By: Nasim Akhtar

Result: Misleading