
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা রাজ্য থেকে সকল বাংলাদেশি, পাকিস্তানি এবং রোহিঙ্গাদের তাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পোস্টটিতে একটি গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়েছে যেখানে বি এস ইয়েদুরাপ্পার একটি ছবি রয়েছে। নীচে লেখা রয়েছে “কর্ণাটক থেকে সকল বাংলাদেশি, পাকিস্তানি এবং রোহিঙ্গাদের বেছে বেছে তাড়ানোর নির্দেশ দিলেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বি এস ইয়েদুরাপ্পা। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে “সবাই যেনো যোগী আদিত্যনাথ মহারাজকে ছাপিয়ে যেতে চাইছে 😌 26”।
আমরা তথ্য যাচাই করে জানতে পারি এই দাবি ভুয়ো। কর্ণাটকে অবৈধভাবে ভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেওয়ার বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মে ২০২১, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের দায়ে কর্নাটকের বেঙ্গালুরু শহর থেকে সমবয়স্ক ৬ জনকে গ্রেফতার করে রামামুরথি নগর থানার পুলিশ। ৬ জনের মধ্যে ৪ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে। পরে জানা যায় ওই ৬ জনই বাংলাদেশি।
এছাড়া, খাদিজা মেহরিন নামের এক পাকিস্তানি মহিলা ২০১৫ সালে ৩ মাসের ভ্রমন ভিসার মাধ্যমে ভারতে আসেন। পরবর্তীতে তিনি কর্নাটকের উত্তর কান্নাডা জেলার ভাটকাল এলাকায় অবৈধভাবে বসবাস শুরু করেন। ২০২১ সালের ১১ জুন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে আমরা গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলাফলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী ভিসা ছাড়া ভারতে অবৈধভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি এবং পাকিস্তানিদের চিহ্নিত্ব করে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। সংবাদ মাধ্যম ‘দি বেঙ্গালুরু লাইভস’র ২০২১ সালের ১৩ জুন তারিখের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা শিভামজ্ঞা জেলার আদি বাড়ি থেকে সংবাদিকফের জানান, “আমি কর্নাটকে অবৈধ ভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছি বিভিন্ন দফতরকে।”

সংবাদ মাধ্যম ‘আউট লুক’র একটি প্রতিবেদনেও বি এস ইয়েদুরাপ্পার এই নির্দেশের খবর দেখতে পাই। এই খবরের সাথে রোহিঙ্গাদের কোনও যোগের খবর আমরা খুঁজে পাইনি।

অন্যদিকে, সংবাদ মাধ্যম ‘দ্যা ফেডেরাল’র একটি প্রতিবেদনে থেকে জানতে পারি, কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু শহরে ১৪৫টি রোহিঙ্গা পরিবার বৈধভাবে শরণার্থী কার্ড নিয়ে বসবাস করে। এই শরণার্থীরা জাতিসংঘের (ইউ এন) হাই কমিশন দ্বারা অনুমোদিত।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। কর্ণাটকে অবৈধভাবে ভাবে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও পাকিস্তানিদের অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেওয়ার খবরকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:না, বাংলাদেশি, পাকিস্তানি ও রোহিঙ্গাদের তাড়ানোর নির্দেশ দেননি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী
Fact Check By: Nasim AResult: Missing Context