
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন যুবতীর ছবি শেয়ার করে তাকে কর্ণাটকের হিজাব-বিতর্কে ভাইরাল হওয়া মুসকান বলে দাবি করা হচ্ছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন তরুণী বসে রয়েছে।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছেঃ কর্ণাটকের মান্ড্যার এই সেই মেয়ে মুসকান যে গতকাল বোরকা পরে স্কুলে গিয়েছিল এবং ক্যামেরায় ধর্মীয় স্লোগান তুলে বিখ্যাত হয়েছিল এবং যাকে ইউপির দারুল উলূম ইসলামীর মাওলানা ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসরণ করার জন্য 5 লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছিলেন, ওভেশি প্রশংসা করেছেন। এটি এবং তার পিতামাতাকে ইসলামী সংস্কৃতি শেখানোর জন্য কিন্তু বোরকা আর হিজাব শুধু স্কুলেই দরকার, বাইরে তখন ছেড়া জিন্স আর টি-শার্টও চলবে, ধর্মকে শুধু স্কুলে বাস্তবায়ন করতে হবে, জীবনে নয়।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। নাজমা নাজির নামে একজন সমাজকর্মীর ছবিকে কর্ণাটকের হিজাব-বিতর্কের ভাইরাল হওয়া মুসকান দাবি করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল।

উল্লেখ্য, কয়েকদিন কর্ণাটকে উদুপির একটি সরকারি প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে শ্রেণীকক্ষে হিজাব পরে আসা ছাত্রীদের কলেজ চত্বরের বাইরে চলে যেতে বলা হয়। এই ঘটনার পরেই দেশজুড়ে শুরু হয় হিজাব-বিতর্ক। দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি হিজাব পরে ছাত্রীদের ক্লাসে আসার বিরোধিতা করতে শুরু করে। কর্ণাটকের ম্যান্ডার পিইএস কলেজে একজন ছাত্রী কলেজে আসার পথ তাকে হেনস্থা করতে শুরু করে দক্ষিণপন্থী ছাত্রের একটি দল। মেয়েটিকে দেখে তারা ‘জয় শ্রী রাম, জয় শ্রী রাম’ চিৎকার করতে থাকে। উত্তরে মেয়েটি ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান তোলে। এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর হিজাব-বিতর্কের মুখ হয়ে যায় মুসকান হিজাব পরিহিত এই কলেজ ছাত্রী। বিস্তারিত…।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে আমরা ছবিটিকে গুগল সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে ‘Najma Nazeer Chikkanerale’ নামের একটি ফেসবুক হ্যান্ডেলে ভাইরাল ছবিটি দেখতে পাই। ২০১৮ সালের ১৩ মে তারিখে ভাইরাল ছবিটিকে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। এর থেকে আমাদের ধারণা হয় ভাইরাল ছবির মেয়েটির নাম নাজমা নাজির, মুসকান নয়।

এরপর ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো নাজমা নাজিরের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানান, “সম্প্রতি কর্ণাটকের ম্যান্ডার পিইএস কলেজে বোরখা পরায় যাকে হেনস্থা করা হয় আমি সেই মুসকান নই। আমার নাম নাজমা নাজির। আমি একজন সমাজকর্মী এবং জনতা দল সেকুলার (জেডিএস)-এর একজন সদস্য। আমি এর আগেও এনআরসি এবং সিএএ বিরোধী বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেছি। এবারেও কর্ণাটকের হিজাব বিবাদে আমি প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছিলাম। আমার ছবিকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে আমরা সম্মানের পাশাপাশি আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাকে নিয়ে জে সমস্ত দাবিগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে সবকটিই ভিত্তিহীন।”
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর্ণাটক হিজাব-বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু মুসকাং জানিয়েছেন তিনি সবসময় বোরখা পরেই কলেজে যান এবং ক্লাসরুমে বোরখা খুলে হিজাব পরে থাকেন। মুসকান বলেছেন, “হিজাব আমার শরীরের একটা অংশ। আজ অবধি আমাদের প্রিন্সিপাল এই বিষয়ে বাধা দেয়নি। বহিরাগতরা এই সমস্ত ঝামেলা শুরু করেছে।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। নাজমা নাজির নামে একজন সমাজকর্মীর ছবিকে কর্ণাটকের হিজাব-বিতর্কের মুখ মুসকান দাবি করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল।

Title:নাজমা নামে একজন সমাজকর্মীর ছবিকে হিজাব-বিতর্কের মুখ মুসকান দাবি করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: False