পায়ে শিকল বাধা অবস্থায় থাকা এই বৃদ্ধ আদিবাসি অধিকার সংগ্রাম-কর্মী স্ট্যান স্বামী নন

False Political

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ৮৪ বছরের বৃদ্ধ আদিবাসি অধিকার সংগ্রাম-কর্মী স্ট্যান স্বামীকে মৃত্যুর আগে অবধি লোহার শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ছবিটিতে দেখতে যাচ্ছে, একজন বৃদ্ধ মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরা একটি বিছানায় বসে আছেন। তার পায়ে হাতকরার মতো দেখতে লোহার শিকল বাধা রয়েছে।  

পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে “আদিবাসীদের অধিকারের সংগ্রামে ব্রতী মোদি সরকারের নজরে সন্ত্রাসবাদি লোহার চেনে আবদ্ধ 84 বছরের বৃদ্ধ অসুস্থ ফাদার স্ট্যান স্বামী ( মৃত্যুর আগের ছবি )”। 

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পাই এই দাবি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। উত্তরপ্রদেশর ইটাহ জেলার খুনি বাবুরাম বালওয়ান সিংহ-এর হাসপাতালে শিকলে আবদ্ধ থাকাকালীন অবস্থার একটি ছবিকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে। 

ফেসবুক আর্কাইভ 

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে স্ট্যান স্বামী ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে সরকারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। তফসিলি জাতি-উপজাতি শ্রেণির ৭২ জনের দীর্ঘ কারাবাসের বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে উগ্র বামপন্থার অভিযোগে ইউএপিএ (UAPA) ধারায় পশ্চিম সিংভুম জেলায় মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। তার তিন বছর পর স্ট্যান স্বামীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ভীমা-কোরেগাঁও সংঘর্ষে মাওবাদী যোগের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা হয়। আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ৮৪ বছরের স্ট্যান স্বামীকে জেলবন্দি রাখা হয়। এমনকী চিকিৎসা পরিষেবা না দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। বারবার তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হয়।

তথ্য যাচাই 

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভাইরাল ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে মুখ্যধারার বেশ কয়েকটি হিন্দি সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে এর অনুসন্ধান পাওয়া যায়। 

সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’-এর ২০২১ সালের ১৩ মে’র একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, খুনের অপরাধে সাব্যস্ত বাবুরাম বালওয়ান সিং নামের এই লোকটিকে উত্তরপ্রদশের ইটাহ জেলার কারাগারে বন্দী করা হয়। এরপর তার শ্বাসকষ্টের অসুবিধা হলে সংশোধনাগার পরিদর্শক কুলদিপ সিং ভাদুরিয়া বাবুরামকে একটি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরক্ষনেই তাকে আলিগড় হাসপাতালে স্থানান্তর করে দেওয়া হয়। আলিগড় হাসপাতালে বিছানার অভাবে তাকে ইটাহ জেলার হাসপাতালেই ফেরত নিয়ে আসা হয়। সেখানে তার পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়। এই ঘটনা সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারাল আনন্দ কুমার ওই জেলের রক্ষক অশোক যাদবকে বরখাস্ত করেন। 

এন ডি টিভি প্রতিবেদন আর্কাইভ 

সংবাদ মাধ্যম ‘দ্যা টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-এর ২০২১ সালের ১৪ মে’র একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। আরও জানা যায়, উত্তরপ্রদেশের কুল্লা জেলার হাবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা বাবুরাম বালওয়ান সিংহ-কে খুনের দায়ে দোষী সাবস্ত্য হওয়ার পর ৬ ফেব্রুয়ারি ইটাহ জেলার সংশোধনাগারে তাকে বন্দী করা হয়। 

দি টাইমস অফ ইন্ডিয়া প্রতিবেদন আর্কাইভ 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। উত্তরপ্রদেশর ইটাহ জেলার খুনি বাবুরাম বালওয়ান সিংহ-এর হাসপাতালে শিকলে আবদ্ধ থাকাকালীন অবস্থার একটি ছবিকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Avatar

Title:পায়ে শিকল বাধা অবস্থায় থাকা এই বৃদ্ধ আদিবাসি অধিকার সংগ্রাম-কর্মী স্ট্যান স্বামী নন

Fact Check By: Nasim A 

Result: False


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *