বাংলাদেশে সরকারের গনভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে যার প্রধান হয়েছে ডঃ মহম্মদ ইউনুস। শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই দেশে সৃষ্টি অরাজকতার দরুন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিবারদের উপর খবর সামনে এসেছে। সম্প্রতিতে এও জানা যাচ্ছে যে সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে কর্মরত হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যাক্তিকে জোর পূর্বক পদত্যাগ করানো হচ্ছে এমনকি অবৈধ টাকাও আদায়ের জন্য হুমকি দেওয়া, দেশ ছেড়ে চলে যেতেও বলে হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে একটি ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”জোর-জবরদস্তি করে কিভাবে স্কুল-কলেজ প্রতিষ্ঠান থেকে হিন্দু শিক্ষকদের পদত্যাগ করানো হচ্ছে, এই ভিডিওতে তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হলো।“

তথ্য যাচাই করে আমরা দাবিটিকে ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর হিসেবে পেয়েছি। ভিডিওর ব্যাক্তি হিন্দু নয় বরং মুসলিম। তার নাম তৌফিক ইসলাম। তিনি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী।

ফেসবুক পোস্ট

তথ্য যাচাইঃ

ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে শোনা যায় মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বেঁধে রাখা যুবক চেয়ারে বসে থাকা ব্যাক্তিকে বলছেন যে, অফিসে মাদক,আমরা বাংলাদেশকে মাদক মুক্ত করতে চায়। সেই সময়- ভিড় এক্সুরে বলে উঠলো- ঠিক। তারই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে তাকে এখনই অফিস থেকে পদত্যাগ করতে হবে। সেই কথায় সবাই সহমত প্রকাশ করলো। তারপর, ছাত্র নেতা সেই ব্যাক্তিকে বলেছেন- এই ভাবে সেবা দিবেন আপনি ?

এই কথোপকথন এবং সেই কক্ষের দৃশ্য থেকে অনুমান হয় ইহা কোন স্কুল, কলেজ নয়, ইহা একটি কোন সরকারি কার্যালয়।

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। bdnews24-এর ২১ আগস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছাত্রদের হেনস্থার শিকার ব্যাক্তির নাম তৌফিক ইসলাম। তিনি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী। তার অফিস কক্ষের ড্রয়ারে দুই প্যাকেট সিগারেট পাওয়াই তরুণদের দল তাকে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র লিখতে বাধ্য করেছিলেন। এই ঘটনায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনাটি ঘটেছিলো চলতি মাসের ১৯ তারিখে। সেদিনই পৌরসভার আরও দুই কর্মকর্তাকে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র লিখতে বাধ্য করেছিল ছাত্রদের এই দল।

প্রতিবেদন আর্কাইভ

Swadesh Pratidin-এর ভিডিও উপস্থাপন অনুযায়ী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শুদ্ধিকরণ অভিযানের কর্মসূচী পালন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের একদল। অবৈধভাবে নির্বাচিত মেয়র, কাউন্সিলর, সভাপতি ও কর্মকর্তাদের পদত্যাগ পত্র লিখতে বললে এবং তারা প্রানের ভয় তা তারা করেও। বিস্তারিত জানতে নীচের ভিডিও উপস্থাপনটি দেখুনঃ

অন্যান্য প্রতিবেদনে ভিডিওর ব্যাক্তিকে তৌফিকূল ইসলাম বলে চিহ্নিত করেছে।

যুগান্তর প্রতিবেদন আর্কাইভ

নিষ্কর্ষঃ

তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর নামে ভাইরাল দাবিটি মিথ্যা। ভিডিওর ব্যাক্তি হিন্দু নয়, মুসলিম। এমনকি তিনি স্কুল-কলেজ শিক্ষকও নন। তার নাম তৌফিকুল ইসলাম। তিনি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী।

Avatar

Title:না, ভিডিওটি বাংলাদেশে হিন্দু শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানোর নয়

Written By: Nasim A

Result: False