
গত মাসের ২৯ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে চলমান মহাকুম্ভ মেলায় গঙ্গা, ইয়মুনা ও সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে পুন্য স্নানের উদ্দেশ্যে যাওয়া পুন্যার্থিদের ভিড়ের চাপে ৩০ জনের মৃত্যু এবং ৯০ জনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনা অতিরিক্ত ভিড়, খারাপ ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং পূর্ণসংখ্যার একত্রিত হওয়ার কারণে ঘটেছে বলেই সংবাদ মাধ্যমের খবর। এই প্রেক্ষিতে পুলিশ লাঠিচার্জের একটি ভিডিও শেয়ার করে সেটিকে কুম্ভমেলায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের লাঠিচার্জের ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”পরিবার যদি বিচার চাইতে আসে, কুম্ভমেলায় নিখোঁজ পরিজনের খোঁজ নিতে আসে তাহলে যোগী বাবার পুলিশ লাঠি চার্জ করা পরিবারের উপর এই রামরাজত্ব কিসের। গোবর ভক্তরা আর এক বার জোরসে বলো “জয়শ্রীর আম”।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি যে পুলিশের লাঠিচার্জের এই ভিডিওটি উত্তরপ্রদেশের নয়, ঝাড়খান্ডের।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ভিডিও সম্বলিত বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সংবাদ মাধ্যম ‘দি ঝাড়খান্ড স্টোরি’র ১ জানুয়ারি,২০২৫, তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের লাঠিচার্জের এই ভিডিওটি ধানবাদের ব্যাঙ্ক মোড়ের বিকাশ নগরের। বিকাশ নগরের নালার খাল থেকে রবি কুমার নামের এক ব্যক্তির মৃত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ আকাশ কুমারকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। রবি কুমারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিকাশ নগরের বাসিন্দারা ব্যাঙ্ক মোড় পুলিশ স্টেশনের সামনে জমায়েত হয়ে আকাশ কুমারকে তাদের হাতে দেওয়ার দাবি তোলে। চাপ সৃষ্টির জন্য জনতা প্রধান সড়কে টায়ার পুড়িয়ে ধানবাদ-বোকোড়ো এবং ধানবাদ-সিন্দ্রি সড়ক অবরোধ করে। ক্ষুব্ধ জনতার ভিড়কে নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাঠি চার্জ করেছিলেন।
‘ইটিভি ভারত’-এর প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
রবি এবং আকাশের মধ্যে একটি তর্ক-বিতণ্ডা হয়েছিল। তর্কের সময় দুজনই দৌড়াতে দৌড়াতে একটি নালায় পড়ে যান। আকাশ রবির মাথা পানির নিচে চেপে ধরে রাখে যার ফলে রবি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর, আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তদন্ত শুরু হয়।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ঝাড়খান্ডের ধানবাদে পুলিশের লাঠিচার্জের ভিডিওকে মহাকুম্ভে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের লাঠিচার্জের দাবিতে শেয়ার করা হচ্ছে।

Title:পুলিশের লাঠিচার্জের ভাইরাল ভিডিওটি ঝাড়খান্ডের, উত্তরপ্রদেশের নয়
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False