
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, তুরস্কবাসী নামাজ পড়ার সময় বৃষ্টি হয় এবং দাবানলের আগুন থেমে যায়। প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে, একজন বয়স্ক লোক মাথায় টুপি এবং মুখে মাস্ক পরে বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তার ওপর নামাজ পড়ছেন। অন্য ছবিতে দেখা যাচ্ছে একজন লোক মাটিতে বসে এবং আরেকজন দাড়িয়ে বৃষ্টির মধ্যে প্রার্থনা পড়ছেন।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “#আল্লাহর_সাহায্য তুরস্কের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হচ্ছিল, কারণ দিনদিন আবহাওয়ার তাপমাত্রা বেড়েই চলছিল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরপ্রার্থনানের একে পার্টি থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তারা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়বে। নামাজ পড়ান তুরস্কের অন্যতম ধর্মীয় নেতা, তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক শাখা দিনায়েতের চেয়ারম্যান আলী আরবাশ (Ali Erbaş)। এ নিয়ে তুরস্কের সেক্যুলার এবং এথিস্টরা হাসাহাসি করে৷ কারণ ওয়েদার রিপোর্ট অনুযায়ী আরো ১৫ দিনেও আনাতোলিয়াতে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নাই। গতকাল তুরস্কে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছে অথচ পাশেই থাকা গ্রীসে কোনো বৃষ্টি হয় নাই।………”
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়া এবং ভিত্তিহীন। ২০২০ সালের দুটি ছবিকে তুরস্ক দাবানলের সাথে যুক্ত করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।



উল্লেখ্য, গত ৭ অগস্ট বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতে ফলে তুরস্কের ভয়াবহ দাবানল প্রায় নিয়ন্ত্রণে আসে। পাঁচ হাজারের বেশি দমকল কর্মী ১১ দিন ধরে এই আগুন নেভানোর কাজে দিন রাত পরিশ্রম করে। অন্যদিকে, গ্রীসে দাবানল আরও ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। এভিয়া দ্বীপের বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবি দুটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। খুব সহজেই এর অনুসন্ধান পেয়ে যাই।
প্রথম ছবি

রিভার্স ইমেজ সার্চ করতেই তুরস্কের সংবাদ মাধ্যম ‘ডেইলি সাবাহ’র ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বরের একটি প্রতিবেদনে এই ছবিটি দেখতে পাই। জানতে পারি, তুরস্কের বিভিন্ন রকম ধর্মীয় প্রথার মধ্যে অন্যতম হল ‘বৃষ্টির প্রার্থনা’। চাষের জমির উর্বরতা বাড়ানো এবং ফসল ভালো হওয়ার জন্য তুরস্কবাসী বৃষ্টির জন্য আল্লাহার কাছে প্রার্থনা করে। তুর্কি ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘ইয়ামুর দুয়া’।

দ্বিতীয় ছবি

এই ছবির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ফলাফলে ‘টিআরটি হাবের’ নামে একটি তুর্কি ভাষার সংবাদ মাধ্যমে এর অনুসন্ধান পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ১৯ জুন তারিখের এই প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, করোনা ভাইরাসের কারনে কোভিড বিধি মেনে জুম্মার দিন রাজধানী আঙ্কারা শহরে বৃষ্টির মধ্যে নামাজ আদায় করেন তুরস্কবাসী।

এছাড়া, প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে এরকম কোনও খবর খুঁজে পাইনি যেখানে বলা হয়েছে এরপ্রার্থনান আলি আরবাস’কে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০২০ সালের দুটি ছবিকে তুরস্ক দাবানলের সাথে যুক্ত করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:পুরনো দুটি ছবিকে তুরস্কের দাবানলের সাথে জুড়ে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: False