সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ফেসবুকে অবিশ্বাস্য ঘটনা যা ১০০মিলিয়ন বছরের একবার ঘটে বলে দাবি করে একটি ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে। ২০ সেকেন্ডের এই ভিডিও ক্লিপটি শেয়ার করে ভিডিওতে দেখতে পাওয়া জিনিসটিকে বল লাইটনিং বলে দাবি করা হচ্ছে। ভিডিওতে আলোর বলের মত একটি গোলাকার জিনিসকে রেললাইনের পার হতে দেখা যাচ্ছে এবং যখন জিনিসটি রেল লাইনের সংস্পর্শে আসছে তখন তা থেকে বিদ্যুতের স্ফুলিঙ্গ তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই জিনিসটিকে পাশের জঙ্গলে চলে যেতে দেখা যাচ্ছে।

এই ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,” আবিশ্বাস্য, দেখে নিন এই অদ্ভুত সুন্দর জিনিসটাকে.. "বল লাইটনিং" ⚪⚡ কখনো কদাচিৎ এ ধরনের বিদ্যুতের কথা শোনা যায়, যেটা ঠিক বলেরই আকার ধারণ করে কিছুক্ষণের জন্য ভেসে বেড়িয়ে হটাৎ এক্সপ্লোড করে। সে বিদ্যুত একটি মানুষের কাছ দিয়ে যাবার ফলে যদি দেখা যায় যে সেই মানুষের মধ্যে একটা বিশেষ কোন পরিবর্তন ঘটে গেছে, তাহলে বলার কিছু নেই। এই "বল লাইটনিং" এর ব্যাপারে সত্যজিত রায় তাঁর "নকুড়বাবু ও এল ডোরাডো" গল্পে লিখে গেছেন, যেটি পরবর্তিকালে "প্রফেসর শঙ্কু ও এল ডোরাডো" সিনেমা রূপে প্রকাশ পায়। তবে.. IT HAPPENS ONCE IN 100 MILLIONS 😊⚡ 🖋 রাজদীপ ঘোষাল।“

তথ্য যাচাই করে আমরা পেয়েছি দাবিটি ঠিক নয়। কম্পিউটারের সফটওয়্যারকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।

ফেসবুক পোস্ট

উল্লেখ্য, বল লাইটনিং হল একটি বিরল এবং বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনা যা একটি উজ্জ্বল, গোলাকার বস্তুর চেহারা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যার আকার একটি মটরের ব্যাসের সমান তার থেকে কয়েক মিটার ব্যাস পর্যন্ত হতে পারে। বল লাইটনিং কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং প্রায়শই অনুভূমিকভাবে সরে যায়, কখনও কখনও ভূমি বা ভবনের আকৃতি অনুসরণ করে।

তথ্য যাচাইঃ

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, হুবহু এই ভিডিওটি ‘Andrei Trukhonovets’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে পেয়ে যাই। ভিডিওটি ২০১৯ সালের ২৭মে তারিখে আপলোড করা হয়েছে এবং শিরোনামে লেখা হয়েছে-রেলওয়ের কাছে বল লাইটনিং এর দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি হয়েছে। [কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি]

ভিডিওর কমেন্ট সেকশনে ‘Andrei Trukhonovets’ জানিয়েছেন যে- এই ভিডিওটি তৈরি করা হয়েছিল যখন আমি সবেমাত্র কম্পিউটার গ্রাফিক্স শিখতে শুরু করেছি। তাই এখানে এবং সেখানে প্রচুর ভুল রয়েছে এবং আমি মনে করি কেউ যদি মনোযোগ সহকারে দেখে তাহলে সে ভুলগুলি স্পষ্টভাবে দেখতে পাবে।

Andrei Trukhonovets নামের ব্যাক্তি আসলে বেলারুসের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন থ্রি-ডি আর্টিস্ট। তিনি AFB কে বলেছিলেন- ভিডিও সম্পাদনা সফ্টওয়্যার অ্যাডোব আফটার ইফেক্টস ব্যবহার করে ভিডিওটি তৈরি করেন এবং ২০১৯ সালের মে মাসে এটি ইউটিউবে আপলোড করেন।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওটির আসলে অস্তিত্ব নেই। ভিডিওটি কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা।

Avatar

Title:কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি বল লাইটনিং এর ভিডিওকে বাস্তব ঘটনা দাবি করে শেয়ার

Fact Check By: Nasim Akhtar

Result: Altered