
২০১৯ সালের মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জের একটি খুনের ঘটনার ওপর লেখা একটি প্রতিবেদনের ছবিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে। প্রতিবেদনটির শিরোনামে লেখা রয়েছে, “কুপিয়ে খুন স্বামী, স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে”। মৃত ওই পরিবারের ছবিও দেওয়া রয়েছে পোস্টটিতে। একই ছবির মধ্যে প্রতিবেদনটির ওপরে ও নিচে লেখা রয়েছে,
“দুষ্কৃতিরা এখনো গ্রেফতার হয়নি কেন? এ কোন রাজ্যে বসবাস করছি আমরা? খুনি কে? পুলিশ কোথায়? বিচার কোথায়?
২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনি ধরা না পরলে পদত্যাগ করুন রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রী”
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। এই ঘটনার দু’সপ্তাহের মধ্যে এই খুনের কিনারা হয়। ২৪ হাজার টাকার একটি বিমা নিয়ে গোলমালের জেরে এই পরিবারকে খুন করে উৎপল বেহারা নামে এক ব্যাক্তি। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেরা করার পর উৎপল তার স্বীকারোক্তি দেয়।

তথ্য যাচাই
প্রথমে গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদমাধ্যম ‘সংবাদ প্রতিদিন’ এর ২০১৯ সালের ৮ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) থেকে জানতে পারি,
“বাড়ির ভিতর থেকে এক শিক্ষক, তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ও ছেলের ক্ষত বিক্ষত দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে। খবর পেয়েই ঘটনাস্থল থেকে দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল একটি ধারাল অস্ত্র পাওয়া যায়।“

এরপর আরও কিওয়ার্ড সার্চ করে খবরের কাগজ ‘আনন্দবাজার’-এর ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, এই খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহারাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রতিবেদনটিতে লেখা রয়েছে,
মুর্শিদাবাদের জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, এই খুনের অভিযোগে ধৃতের নাম উৎপল বেহরা। বছর কুড়ির ওই তরুণের বাড়ি মুর্শিদাবাদেরই সাগরদিঘি থানার সাহাপুর গ্রামে। ২৪ হাজার টাকার একটি বিমা নিয়ে গোলমালের জেরেই আক্রোশবশত ওই খুন করেছিল বলে জেরায় জানিয়েছে উৎপল।

‘আনন্দবাজার’-এর ১৮ অক্টোবরের আরও একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, মুর্শিদাবাদের এসপি মুকেশ কুমার এই ঘটনায় সরাসরি উৎপলের যোগ থাকার বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরে জানান, ‘‘আমরা নিশ্চিত এ খুন একা উৎপল বেহারাই করেছে। জেরায় তা কবুলও করেছে সে।’’
তিনি আরও বলেন, খুন করার পরে দশমীর দুপুরে জিয়াগঞ্জ সদরঘাট থেকে নৌকায় ভাগীরথী পেরিয়ে আজিমগঞ্জ স্টেশনে ট্রেন ধরে সাহাপুরের বাড়িতে ফিরেছিল উৎপল।

ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো এই বিষয়ে আরও তথ্য জানতে মুর্শিদাবাদের লালবাগের এসডিপিও বরুন বৈদ্যর সাথে যোগাযোগ করে। তিনি আমদের বলেন,
“জিয়াগঞ্জের পরিবার ঘটনার কিনারা খুনের দু’সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে গিয়েছিল। খুনিকে গ্রেফতার করার পর তার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়ে গিয়েছে অনেক আগে। আইপিসি ধারা ২০১ (প্রমান লোপাট) এবং ধারা ৩০২ (খুন) দেওয়া হয়েছে। মামলাটির শুনানি এখনও চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ার দাবি ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন।“
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০১৯ সালের জিয়াগঞ্জের পরিবার খুনের ঘটনায় দোষীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ এবং এই মামালার শুনানি এখনও চলছে

Title:২০১৯ সালের জিয়াগঞ্জের পরিবার হত্যার ঘটনায় খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ
Fact Check By: Rahul AResult: False