সম্প্রতি একটি ভিডিও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বেশ হয়েছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, কেদারনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর আক্রমন করেছে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন। এই ভিডিওটি আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ টিপলাইন নম্বর +919049053770-এ আমাদের এক পাঠক পাঠিয়েছেন।

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি পোস্টের দাবিটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। তীর্থযাত্রীদের সাথে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা মুসলিম সম্প্রদায়ের নয়।

ভিডিওটি দেখুন এখানে।

তথ্য যাচাইঃ

এই দবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলে, কেদারনাথ যাত্রীদের সাথে মারধরের ঘটনা কেন্দ্রিক মুখ্যধারার বিভিন্ন প্রতিবেদন পেয়ে যায়। ’পিটিআই’-এর ১৪ জুন,২০২৩, তারিখের প্রতিবেদন অনুসারে, মারধরের এই ঘটনাটি ঘটেছে ১০ জুন তারিখে যখন দিল্লীর মহিপাল্পুরের এক বাসিন্দা কেদারনাথ যাত্রায় গিয়েছিলেন। প্রতিবেদন অনুযায়ী, লোকটি যখন ভীমবালি সেতুর কাছে একটি ঘোড়াকে করুণ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছিল তখন সে থামে এবং তাকে উদ্ধার করতে আশেপাশের লোকদের সাহায্য চেয়েছিল কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। সেই সময় তিনি দেখলেন একজন লোক অন্য ঘোড়া ও খচ্চরকে মারছে। তাড়াতাড়ি তিনি হস্তক্ষেপ করেন এবং পশুদের মারধর না করতে বলেন। এই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে চালকদের দল এবং ঘোড়া ও খচ্চর চালকদের একটি দল তাকে আক্রমণ করে এবং তাকে অবিলম্বে উত্তরাখন্ড ছেড়ে চলে যেতে বলেছিল। এই ঘটনায় অভিযুক্ত একজন নাবালক সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

প্রতিবেদন আর্কাইভ

অন্যান্য প্রতিবেদন গুলো পড়ুন এখানে, এখানে।

মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তঃ

কেদারনাথ ধাম পথচারী রুটে ভক্তদের লাঞ্ছিতকারী ঘোড়া ও খচ্চর চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে গ্রেফতার করেছে উত্তরাখন্ড পুলিশ। অভিযুক্তদের নাম হল- অঙ্কিত সিং, সন্তোষ কুমার, রোহিত কুমার এবং জখন ভার্দার। এ ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নাবালকের বিষয়ে পৃথক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

https://twitter.com/uttarakhandcops/status/1668621208756322304

মারধরের এই ঘটনাটি ঘটেছে ১০ জুন তারিখে এবং শরণার্থী মামলা দায়ের করেছিলেন ১২ জুন তারিখে। উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ পুলিশ জানিয়ছে- কেদারনাথ ধাম যাত্রার পথচারী রুটে ভীমবালি এলাকায় ভক্তদের লাঞ্ছিত করা হয়েছিল যেখানে ভক্তের দ্বারা কোতোয়ালি সোনপ্রয়াগে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল যার ভিত্তিতে পুলিশ স্তরে অভিযোগ নথিভুক্ত করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের নামের তালিকাটিও শেয়ার করেছেন। এই ঘটনাকে ঘিরে বিভ্রান্তিকর পোস্ট শেয়ার না করার আপিলও করেছেন।

অভিযুক্ত অঙ্কিত সিং, সন্তোষ কুমার, রোহিত কুমার এবং জখন ভার্দার নামের ঘোড়া সঞ্চালকদের লাইসেন্স বাতিল করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কেদারনাথ ধাম পথচারী রুটে ভক্তদের সঙ্গে মারামারির ঘটনায় সামাজিক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার জন্য যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে একটি টুইট করা হয়েছে উত্তরাখণ্ডের রুদ্রপ্রয়াগ পুলিশের তরফ থেকে।

তথ্যের ভিত্তিতে স্পষ্ট হয় যে, শরণার্থীদের মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা মুসলমান সম্প্রদায়ের নয়।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়ো। কেদারনাথ তীর্থযাত্রীদের সাথে মারধরের ঘটনার সাথে যুক্ত অভিযুক্তরা মুসলিম সম্প্রদায়ের নয়।

Avatar

Title:কেদারনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর আক্রমনকারী লোকজন মুসলিম সম্প্রদায়ের নয়

Written By: Nasim Akhtar

Result: False