বিরাটি স্টেশনে ছেলে ধরার সন্দেহে আটক মহিলাই ব্যাগ বন্দী শিশুর মা

False Social

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াই ছেলে ধরার নামে অনেক ফেসবুক পোস্ট ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি পোস্টের সত্যতা যাচাই করে বারাসাত পুলিশ স্পষ্টীকরণও জারি করেছে। এরই মাঝে আরেকটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, বিরাটি স্টেশনে এক মহিলা একটি বাচ্চা শিশুকে ব্যাগে করে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছিলেন এবং মহিলাকে অপহরণকারী বলে দাবি করেছেন।  

একটি পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”এই সেই বাচ্চা যাকে বিরাটি স্টেশন থেকে উদ্ধার করা হলো। শিশু চুরির অভিযোগ এই মহিলার উপরে। ব্যাগের ভিতর পাওয়া গেছে বাচ্চাটি।“ 

অন্য আরেকটি পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”বাচ্চা টা কে সকালে বাজারের ব্যাগে ঢুকিয়ে চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে বাচ্চা টা হঠাৎ কান্না করে উঠায়…যাত্রীরা মিলে বাচ্চা টাকে  উদ্ধার করে  বিরাটি পুলিশ এর হাতে তুলে দেওয়া হয় এখনও বাচ্চার মা বাবা কে খুঁজে পাওয়া যায় নি সবাই পোস্ট টা শেয়ার করো যাতে বাচ্চা টা তার মা এর কোলে ফিরে যেতে পারে #share #follow #viral,, birati station 🚉🚉।“ 

তথ্য যাচাই আমরা ভাইরাল দাবিটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। যে মহিলার ব্যাগ থেকে বাচ্চা উদ্ধার হয়েছে তিনি সেই শিশুর মা। 

ফেসবুক পোস্ট  আর্কাইভ 

তথ্য যাচাইঃ 

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে জানা যায়, বুধবার সকালে দত্তপুকুর থেকে শিয়ালদাহ গামী ট্রেনে ব্যাগ বন্দী করে এক বাচ্চা শিশুকে নিয়ে যাত্রা করছিলেন এক মহিলা। ট্রেন চলাকালীন ব্যাগ থেকে শিশুর কান্না শূনতে পেয়ে অন্যান্য যাত্রীদের ঐ মহিলার উপর শিশু পাচারকারী বলে সন্দেহ হয় যা নিয়ে শোরগোল মেতে ওঠে ট্রেনের কামরায়। পরবর্তী স্টেশন বিরাটিতে এসে মহিলাকে নামিয়ে পুলিশের হাতে তূলে দিয়েছিলেন। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে, ব্যাগ বন্দী বাচ্চাটি সেই মহিলারই অর্থাৎ মহিলা নিজদের ছেলেকে ব্যাগ বন্দী করে যাত্রা করছিলেন। 

আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন-এর ২৮ জুন,২০২৪, তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিশু পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত মহিলার নাম বাসন্তী পাণ্ডে। রামেস্বর পাণ্ডের নামে এক ব্যাক্তি নিজেকে মহিলার স্বামী বলে দাবি করেছেন এবং জানিয়েছেন মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাদের আদি বাড়ি ওড়িশায়, রামেশ্বরের বিহারে। তাঁরা বামনগাছিতে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। ওই শিশুটি তাঁদেরই সন্তান। বাসন্তীর পরিচয় যাচাইয়ের পর তাকে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কিন্তু শিশুটিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় চাইল্ড লাইনে। 

এ প্রসঙ্গে শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার জে মার্সি বলেন, “আমরা আমাদের কাজ করেছি। শিশুটিকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দিয়েছি। এর পর বাবা-মা চাইল্ড লাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাচ্চাটিকে ফিরিয়ে নেবেন। এখানে আমাদের আর কোনও ভূমিকা নেই।“ শুক্রবার শিশুটিকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে চাইল্ড লাইনে গিয়েছিলেন মা-বাবা। কিন্তু ফের তাঁদের খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে। প্রয়োজনীয় নথি না থাকায় এখনও ছেলেকে ফিরে পাননি দম্পতি। বুধবার রাতে রামেশ্বর শুধু পুলিশকে সন্তান জন্মানোর পরে হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেট দেখাতে পেরেছিলেন। এ প্রসঙ্গে রেলপুলিশের একটি সূত্রে খবর, নিয়ম অনুযায়ী, শিশুটিকে শিশু কল্যাণ সমিতির কাছে রাখা হয়েছে। সব নথি যাচাই হলেই তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। 

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

দি ওয়াল-এর প্রতিবেদনেও লেখা হয়েছে,”কোনও শিশু চুরি হয়নি, অভিযুক্ত মহিলাই বাচ্চার মা! বিরাটি কাণ্ডে বলল রেল পুলিশ।“ 

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

আনন্দ বাজার পত্রিকার ই-পেপারের প্রতিবেদনে অভিযুক্ত মহিলাকে ব্যাগ বন্দী শিশুর মা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। 

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

নিষ্কর্ষঃ তথ্যের ভিত্তিতে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে যে, বিরাটিতে ছেলে ধরার নামে ভাইরাল দাবিটি ভুয়ো। অভিযুক্ত মহিলা শিশু পাচারকারী নয় বরং তিনি আসলে ব্যাগ বন্দী শিশুর মা।

Avatar

Title:বিরাটি স্টেশনে ছেলে ধরার সন্দেহে আটক মহিলাই ব্যাগ বন্দী শিশুর মা

Fact Check By: Nasim Akhtar 

Result: False


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *