সুন্দর দেখতে একটি গাছের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে সেটিকে হিমালয়ের তিব্বত অংশে দেখতে পাওয়া প্যাগোডা ফুল গাছের ছবি বলে দাবি করা হচ্ছে। সাথে এও দাবি করা হচ্ছে যে, এই ফুলটি ৪০০ বছরের ব্যবধানে ফোটে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “প্যাগোডা ফুল ৪০০ বছরে ১ বার ফোটে। হিমালয়ের তিব্বত অংশে দেখা যায়।“

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি পোস্টের দাবিটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। পোস্টের ছবিতে দেখতে পাওয়া ফুল গাছটি প্যাগোডা ফুল গাছ নয়, এটি ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নির্মিত কাল্পনিক একটি গাছ। প্যাগোডা নামের ফুল গাছটি প্রত্যেক বছরেই ফোটে। ৪০০ বছরে একবার ফুল হয় এরকম কোন গাছের অস্তিত্ব নেই।

ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ

তথ্য যাচাইঃ

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা গুগলে ’pagoda flower’ সার্চ করি। ফলে,প্যাগোডা ফুল গাছের ছবি পাওয়া যায়। দেখেই স্পষ্ট হয়ে যায় পোস্টের ছবি ও আসল প্যাগোডা ফুল গাছের ধরন একদমই আলাদা। এর বৈজ্ঞানিক নাম হল Clerodendrum paniculatum এবং এটি ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব চীনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে দেখা যায়। প্যাগোডা ফুল প্রতি বছর গ্রীষ্মের মাঝামাঝি থেকে শরৎ পর্যন্ত হয়।

নীচে ফেসবুক পোস্টের ছবি ও আসল প্যাগোডা ফুল গাছের তুলনামূলক ফ্রেমটি দেখুনঃ

৪০০ বছর পর একবার প্রস্ফুটিত ফুল ?

বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ অস্ট্রেলিয়ান অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস ফ্যাক্ট-চেকিং প্রকল্পকে জানিয়েছেন যে, প্রতি ৪০০ বছরে ফুল ফোটে এমন কোনও উদ্ভিদ বিশ্বের কোথাও নেই।

ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডোর প্রতিনিধি কেরালার উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক ’ডাঃ এম সাবু’র সাথে পোস্টে দাবিকে কেন্দ্র করে কথা বলেন। তিনি বলেন,” প্রতি ৪০০ বছরে একবার ফুল ফোটে এমন দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যে।“

গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ধীর গতিতে প্রস্ফুটিত ফুল গাছ হল বিরল প্রজাতির giant bromeliad Puya raimondii। ইহা ১৮৭০ সালে বলিভিয়ার পর্বতমালার ৩,৯৬০মিটার (১২,৯৯২ ফুট) উচ্চতায় আবিষ্কৃত হয়েছে। উদ্ভিদটিতে তার জীবনের প্রায় ৮০-১৫০ বছর পরে ফুলের গুচ্ছের উদ্ভব হয়।

পোস্টের ছবির উৎস ?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ছবিটিকে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, ছবির সম্বন্ধে কোন বিস্বস্ত তথ্য পাওয়া যায়না।

তবে,বিভিন্ন আশ্চর্য ছবির অ্যালবামে এই ছবির উল্লেখ পাওয়া যায়। অ্যালবামের ছবি গুলো দেখেই বোঝা যায় যে ছবি গুলো কাল্পনিক ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা।

তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে প্রমানিত হয় যে, ফেসবুক পোস্টের ভাইরাল ছবিটি প্যাগোডা ফুল গাছের নয়। ৪০০ বছরে একবার ফুল হয় এরকম কোন গাছের অস্তিত্ব নেই।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়ো। পোস্টের ছবিতে দেখতে পাওয়া ফুল গাছটি প্যাগোডা ফুল গাছ নয়, এটি ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে নির্মিত কাল্পনিক একটি গাছ। প্যাগোডা নামের ফুল গাছটি প্রত্যেক বছরেই ফোটে। ৪০০ বছরে একবার ফুল হয় এরকম কোন গাছের অস্তিত্ব নেই।

Avatar

Title:৪০০ বছরে এক বার ফুল ফোটে এরকম কোন গাছের অস্তিত্ব নেই এবং ভাইরাল ছবিটি প্যাগোডা ফুল গাছের নয়

Fact Check By: Nasim Akhtar

Result: False