সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে সেটিকে রাজস্থান শিক্ষক কর্তৃক দলিত ছাত্রকে পিটিয়ে মারার ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে। পোস্টের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কম্পিউটার কোচিং ক্লাসের মত এক ঘরে একজন যুবক এক বাচ্চা ছেলেকে নিষ্ঠুরের মত বেধড়ক মারছে।

পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “জয়পুরে দলিত ছাত্রকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে উচ্চ বর্ণের শিক্ষক। ছাত্রের অপরাধ ছিলো, কেন সে উচ্চ বর্ণের জন্য রাখা আলাদা জলের পাত্র থেকে জল পান করলো! রাজস্থানসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এখনও উচ্চ বর্ণের শিক্ষকদের জন্য আলাদা জলের পাত্র রাখার বিধান রয়েছে। দুপুর বেলা।তেষ্টায় গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। জলের অপর নাম জীবন,তা সকলেই জানে।৯ বছরের দলিত ছাত্রটি কোথাও জল না পেয়ে ঐ পাত্র থেকে লুকিয়ে জল পান করে।এটাই হলো ঐ ছাত্রের জন্য কাল।তাই শিক্ষক ছাত্রকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।চোখে মুখে কানে আঘাত করে। ……………………… “

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র মারধরের এই ভিডিওটি বিহারের পাটনা শহরের, রাজস্থানের নয়।

ফেসবুক পোস্ট

উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজস্থানের জালোর জেলায় অবস্থিত প্রাইভেট স্কুল ’সরস্বতী বিদ্যা মন্দির’-এর নামের স্কুলে চেইল সিং নামের একজন শিক্ষক নয় বছর বয়সের তৃতীয় শ্রেণীর পড়ুয়া ইন্দ্রা মেঘওয়ালকে চরমভাবে মারধর করেন যার ফলে ছেলেটি মারা যায়। দলিত হয়ে স্কুলের পানীয় জলের পাত্র স্পর্শ করায় সেই শিক্ষক তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ১৩ আগস্ট তারিখে আহমেদাবাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা এবং তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনের অধীনে হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে এবং ৪০ বছর বয়স্ক শিক্ষক চেইল সিংকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

তথ্য যাচাই

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ইউটিউবে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে এই ভাইরাল ভিডিওর উৎস খোঁজার চেষ্টা করি। ফলে, সংবাদমাধ্যম ’রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড’-এর চ্যানেলে ভাইরাল ভিডিও কেন্দ্রিক ভিডিও উপস্থাপন পাওয়া যায়। ৬ জুলাই তারিখে আপলোড করা এই উপস্থাপনে ভিডিওটিকে বিহারের পাটনা শহরে এক কোচিং সেন্টারের বলে জানানো হয়েছে। ৫ বছর বয়সের ছেলেটি মারধর করতে করতে লাঠিও ভেঙ্গে যায়। মারধরকারী এই শিক্ষককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

নিউজ১৮ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, মারধরকারি এই শিক্ষকের নাম অমরকান্ত কুমার। মারধরের ভিডিও সামনে আসার পর তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন এবং শেষ অবধি নালন্দা জেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার পর শিশুটি অজ্ঞান হয়েগেছিল। তাকে পাটনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

এই একই ভিডিও একই দাবির সাথে হিন্দি ভাষাতেও ভাইরাল হয়। ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো হিন্দি এই দাবির সত্যতা যাচাই করে এটিকে ভুয়ো প্রমাণ করে। ফ্যাক্ট চেকটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিস্যান্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। শিক্ষক কর্তৃক ছাত্র মারধরের এই ভিডিওটি বিহারের পাটনা শহরের, রাজস্থানের জয়পুরের নয়

Avatar

Title:ভিডিওতে রাজস্থান শিক্ষক একজন দলিত ছাত্রকে পিটিয়ে মার মারছে? জানুন সত্যতা

Fact Check By: Nasim A

Result: False