
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে মাতৃভাষা নিয়ে সৃষ্টি হওয়া অশান্ত পরিবেশের প্রেক্ষাপটে সামাজিক মাধ্যমে অনেক ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। সম্প্রতি একটি ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পুলিশ কর্মী শিশুকে কোলে নিয়ে থাকা ব্যক্তিকে নির্মমভাবে লাঠিপেটা করছেন। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশে বাংলা বলার কারণে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে মারধর করেছেন।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”উত্তর প্রদেশে বাংলা বলায় পুলিশের লাঠিচার্জ। বাঙালি আর কবে জাগবে??।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি মিথ্যা। ভিডিওটি ২০২১ সালের। উত্তরপ্রদেশের আকবরপুরের জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভ প্রদর্শনকারীদের নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছিলেন।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলস্বরুপ, ভিডিওকে ঘিরে সংবাদ উপস্থাপন পেয়ে যায়। হিন্দুস্তান টাইমস-এর ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি ১১ ডিসেম্বর,২০২১, তারিখে পোস্ট করা হয়েছে এবং ক্যাপশনে লেখা হয়েছে-উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে পেটাচ্ছেন, যিনি কোলে একটি শিশু ধরে রেখেছিলেন; তাকে পরে বরখাস্ত করা হয়েছে। এরপর আরেক পুলিশকর্মীকে দেখা যায়, সেই শিশুটিকে জোরপূর্বক ওই ব্যক্তির কোল থেকে টেনে নিয়ে যেতে।
পুলিশ জানিয়েছিলেন- কানপুর দেহাত জেলার আকবরপুরে জেলা হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্ম রাজনিশ শুক্লা সহ শতাধিক কর্মীরা OPD-তে তালা লাগিয়ে ধর্মঘট করছিল। খবর পেয়ে পুলিশ পৌছায় ঘতনাস্থলে। মার খাওয়া ব্যক্তি সেই ভিড়কে বেশী বেশী উস্কানি দিচ্ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে ওই ব্যক্তি SHO বিনোদ কুমার মিশ্রর আঙুলে কামড় দিয়ে আক্রমণ করেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে SHO লাঠিচার্জ করেছিলেন। মার খাওয়া ব্যক্তি রাজনিশ শুক্লার ভাই বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মারধরের শিকার ওই শুক্লা ভাইয়ের ইন্ডিয়া টুডে জানানো তথ্য থেকে স্পষ্ট হয় যে মারধরের এই ঘটনাটি হাসপাতালে প্রদর্শনের সাথে সম্পর্কিত।
অন্যান্য সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওর ব্যক্তিকে বাংলা বলার জন্য মারধর করা হচ্ছে না। এটি আসলে ২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশের কানপুর দেহাত জেলা হাসপাতালে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের একটি ভিডিও।