
চলমান ইরান ইজরায়েল সংঘর্ষের মাঝে একদল মহিলার বদ্ধ ভবনের ভিতরে স্লোগান দিতে দিতে চিৎকার করার ভিডিওকে সামাজিক মাধ্যমে ফেসবুকে বিশাল ভাইরাল হচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”ইরানের মেয়েরা ইরানের হারের আনন্দে হিজাব খুলে ফেলে দিয়ে চিৎকার করে বলছে ” খুমেইনি তুই হারবি” ” খুমেইনি তুই মরবি “।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে ভিডিওটি ইরানেরই, তবে এটি সাম্প্রতিক নয়। ভিডিওটি ২০২২ সালে মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে স্কুলছাত্রীদের হিজাব খুলে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় ধারণ করা হয়েছিল।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলস্বরুপ, এই একই ভিডিওকে ঘিরে দীর্ঘ সংবাদ উপস্থাপন পাওয়া যায়। মেক্সিকোর সংবাদ মাধ্যম ‘Grupo REFORMA’র ইউটিউব চ্যানেলে ৪ অক্টোবর,২০২২, তারিখে আপলোড করা হয়েছে এবং জানানো হয়েছে-ইরানে দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুলের শ্রেণিকক্ষে, যেখানে ছাত্রীদের হিজাব খোলার ঘটনা ঘটেছে।
আরও অনুসন্ধানের পর ভাইরাল এই ভিডিও কেন্দ্রিক আলবেনিয়ার সংবাদ মাধ্যম ‘কোহা’র একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ৪ অক্টোবর,২০২২, তারিখের এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বরে হিজাব ঠিক ভাবে না পরিধান করায় মাহসা আমিনি নামক এক তরুণীকে গ্রেফতার করেছিল ইরান পুলিস। গ্রেফতারের তিন দিন পর অর্থাৎ ১৬ সেপ্তেম্বরে তার মৃত্যু। পরিবার অভিযোগ করেছিল এবং পরবর্তীতে ইউএন মানবাধিকারের fact-finding মিশন রিপোর্টে সুস্পষ্ট প্রমাণ হয়েছিল যে তিনি শারীরিক নির্যাতনে নিহত হয়েছেন। এই মৃত্যুকে ঘিরে দেশ জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রতিবাদস্বরূপ নিজের চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে, হিজাব না পরিধান করেই রাস্তাই ঘুরে বেড়িয়ে মহিলারা নিজেদের বিক্ষোভ জানিয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিক্ষোভ স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়েও ঢুকে পড়েছিল। এই ভিডিওটি সেই বিক্ষোভ প্রদর্শনের অংশ।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওটি ইরানেরই, তবে এটি সাম্প্রতিক নয়। ভিডিওটি ২০২২ সালে মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে স্কুলছাত্রীদের হিজাব খুলে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় ধারণ করা হয়েছিল।

Title:ইরানের তরুণীদের হিজাব খুলে চিৎকার করার ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়, এটি ২০২২ সালের
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False