
৪ নভেম্বর থেকে পশ্চিমবঙ্গ সহ মোট ১২টি রাজ্যে এবং আন্দামান নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপে শুরু হচ্ছে বিশেষ নিবিড় পুনঃপরীক্ষণ (এসআইআর)। ভোটার তালিকা সংশোধনের এই প্রক্রিয়াকেই কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে আলোচনা, সমালোচনা এখন তুঙ্গে। এই প্রেক্ষিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এসআইআর-এর আওতায় বেশ কিছু অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশীকে নিজের দেশে ফেরত পাঠাচ্ছেন ভারতীয় বর্ডার সুরক্ষা ফোর্স। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের সীমান্ত সুরক্ষা ফোর্সের একটি দল কিছু সংখ্যক পুরুষ ও মহিলাকে তাদের ভ্যানে তুলছেন। ভিডিওর উপরে লেখা হয়েছে,”SIR-এর খেলা শুরু হয়েগেছে।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি বিভ্রান্তিকর। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশীদের ঠিকই কিন্তু এটি এসআইআর- এর সাথে সম্পর্কিত নয়।
তথ্য যাচাইঃ
ইতিমধ্যে আমরা জানি, আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হবে ৪ নভেম্বর থেকে। অপরপক্ষে, শেয়ার করা এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে ৩০ অক্টোবরে। অর্থাৎ, ভিডিওটি যে এসআইআর প্রক্রিয়ার সাথে কোন ভাবেই সম্পর্কিত নয় তা স্পষ্ট হয়।
তাহলে ভিডিওর আসল উৎস কি?
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলস্বরূপ, এই ভিডিওকে ঘিরে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম ‘ETV News’ এবং ‘Rtv News’-এর সংবাদ উপস্থাপন পাওয়া যায়। ২৫ অক্টোবরে পোস্ট করা এই উপস্থাপনগুলো অনুযায়ী, গাংনি উপজেলার কাজিপুর ও কাথুয়া সীমান্ত দিয়ে ৬০ জন বাংলাদেশীকে বিজিবির (বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশ) হাতে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ। অনুপ্রবেশকারীদের বেশির ভাগের বাড়ি হল কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকায়। কাজের সন্ধানে বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তারা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। ২৫ অক্টোবরে সীমান্তে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের ফেরত দেওয়া হয়।
https://www.facebook.com/reel/1856909578244811
ইত্তেফাক, যুগান্তর সহ বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। ভারতের মুম্বায়, দিল্লি, আসাম রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। পরে পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফের তেইমপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অনুজ কুমারের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে হস্তান্তর করেছে। পরে তাদের গাংনী থানায় দেওয়া হয়েছে।
নিষ্কর্ষঃ
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওতে দেখা যাওয়া পুরুষ ও মহিলারা বাংলাদেশের নাগরিক। তারা কাজের সন্ধানে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন এবং সম্প্রতিতে তাদেরকে বিজিবির হাতে তুলে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে এই তথ্য সঠিক। তবে এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর (Special Intensive Revision)-এর কোনো সম্পর্ক নেই।
Title:অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর এই ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর এর সাথে সম্পর্কিত নয়
Fact Check By: Nasim AResult: Misleading

