
নেপালে জেন জি আন্দোলনের পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক ও অপ্রাসঙ্গিক পোস্টের বন্যা নেমে এসেছে। সম্প্রতি একটি ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে, যেখানে সাত-আটজন যুবককে একটি মন্দিরসদৃশ চূড়ার মতো স্থাপত্যের উপর উঠে নেপালের পতাকা উড়াতে এবং চূড়ার উপর স্থাপিত কাঠামোটি ভাঙার চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি একটি মন্দির এবং জেন জি আন্দোলনকারীরা মন্দিরটি ভাঙছে।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”নেপালে মন্দির ভাঙছে নেপালের জাগ্রত হিন্দুরা। এতদিন কমিউনিস্ট সরকারের আমলে হিন্দু মন্দির ভাঙতে পারে নি। কমিউনিস্ট সরকারের পতনের পরই হিন্দু জনতা জাগ্রত হয়ে নেপালকে এভাবেই হিন্দরাষ্ট্র বানাবে।“
তথ্য যাচাই করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে এই দাবিটি ভুয়ো। ভিডিওতে দেখা স্থাপত্যটি কোনো মন্দির নয়, বরং একটি সরকারি দফতর। এটি কৈলালী জেলার ধনগড়ি শহরে অবস্থিত নেপাল সরকারের সুদূরপশ্চিম প্রদেশ সভার দফতর।
তথ্য যাচাইঃ
ভিডিওতে দেখা স্থাপত্যটির প্রবেশদ্বারে একটি লেখা দেখা যায়। গুগল লেন্স ব্যবহার করে অনুবাদ করলে দেখা যায়, সেখানে লেখা রয়েছে: “সুদূরপশ্চিম প্রদেশ সভা, ধনগড়ি, কৈলালী”।

এরপর, ভিডিওর কিছু ফ্রেম গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করার মাধ্যমে দেখা যায়—নেপালের কৈলালী-ভিত্তিক একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজ থেকেও একই ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। ওই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে: “সুদূরপশ্চিম প্রদেশ বিধানসভায় জেন জি গ্রুপের আগুন।”
ভিডিওতে দেখা যে স্থাপত্যটির প্রবেশদ্বারটি ফুটে উঠেছে, সেটি আসলে নেপালের সুদূরপশ্চিম প্রদেশের মুখ্য সচিবালয়। গুগল ম্যাপস ঘেঁটে নিশ্চিত হওয়া যায়—এটি সুদূরপশ্চিম প্রদেশ সরকারের মুখ্য কার্যালয়েরই প্রধান প্রবেশদ্বার।
জেন জি আন্দোলনের প্রভাব গোটা নেপালজুড়ে সরকারি দফতরগুলোতেও পড়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, সুদূরপশ্চিম প্রদেশের একাধিক জেলায় সরকারি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। কৈলালী জেলার ধনগড়ীতেও প্রদেশ সভার একটি দফতরে আগুন দেওয়া হয়।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওতে দেখা স্থাপত্যটি কোনো মন্দির নয় বরং একটি সরকারি দফতর। এটি কৈলালী জেলার ধনগড়ি শহরে অবস্থিত নেপাল সরকারের সুদূরপশ্চিম প্রদেশ সভার দফতর।

Title:নেপালে সরকারি ভবনে হামলার ভিডিওকে মন্দির হামলা বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False