
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিন ধরে চলা সংঘর্ষে দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের বড়সড় হামলার কারণে ইরানের রাজধানী তেহরানের অনেক মানুষ স্থানত্যাগ করেছেন। এই প্রসঙ্গে একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে পাকিস্তান সীমান্তে অনেক মানুষের ভিড় জমেছে। ৪৬ সেকেন্ডের এই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষ সীমান্তের গেট খুলতেই ভেতরে প্রবেশ করছেন। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, এটি ইরান-পাকিস্তানের তাফতান সীমান্তের দৃশ্য যেখানে ইরানি নাগরিকরা পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়ার জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”পাকিস্তান ও ইরানের তাফতান সীমান্তের দৃশ্য যেখানে শত শত ইরানি নাগরিকরা ইজরায়েলের ভয়ে পাকিস্তানের সীমান্তে আশ্রয় নেওয়ার জন্য দুদিন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। পাকিস্তান যখন তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য গেট খুলে দিল তখন সংখ্যাটা হাজারে পৌঁছে গেছে। যে দেশে আটা চাল তো ছাড়ো খাওয়ার জল ও নেই সেই দেশে গিয়ে ইরানিরা কত খুশি😂😂 অন্তত প্রাণটা তো বাঁচবে 🤣🤣।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি মিথ্যা। ভিডিওটি ইরান ইসরায়েল সংঘর্ষের সাথে সম্পর্কিত নয়।
https://www.facebook.com/share/v/1LJ7LM3ieR
ফেসবুক পোস্ট, ফেসবুক পোস্ট, ফেসবুক পোস্ট,
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলস্বরুপ, এই একই ভিডিও Rizvi_writess’ নামক এক্স প্রোফাইলে পাওয়া যায়। ৩০ আগস্ত,২০২৩, তারিখে করা এই এক্স পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”তাফতান সীমান্তে হজ যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে এবং তাদের থেকে ঘুষ নেওয়া হচ্ছে, যার ফলে হজ যাত্রীদের অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কিন্তু এই সব কষ্টের মধ্যেও হজ যাত্রীদের হৃদয়ে ইমাম হুসাইনের প্রতি ভালোবাসা একটুও কমছে না।“ যা থেকে ্পষ্ট হয় যে, ভিডিওটি ইরান ইসরায়েল সংঘর্ষের সাথে সম্পর্কিত নয়।
উপরোক্ত তথ্য মাথায় রেখে গুগলে প্রাসঙ্গিক কী ওয়ার্ড সার্চ করার মাধ্যমে দেখা যায় যে, ‘Fahim Jafri’ নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে একই ভিডিওটি ৩০ আগস্ট, ২০২৩ তারিখে আপলোড করা হয়েছে। ভিডিওর সাথে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি পাকিস্তান-ইরান সীমান্তে কারবালার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া জায়েরিনদের (তীর্থযাত্রীদের) ভিডিও।
তাফতান সীমান্ত পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের চাগাই জেলায় অবস্থিত এবং এটি ইরানের সঙ্গে সীমান্ত পারাপারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ। পাকিস্তানি তীর্থযাত্রীরা এই সীমান্ত দিয়ে ইরানে প্রবেশ করেন, যাতে তারা আরবাইনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন এবং ইরাকের কারবালায় ইমাম হুসাইনের দরগাহে শ্রদ্ধা জানাতে এই পথ দিয়েই যাত্রা করেন।
নিষ্কর্ষঃ
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভাইরাল ভিডিওটি ২০২৩ সালের এবং এর ইরান-ইসরায়েলের সংঘর্ষের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। এটি ইরানি নাগরিকদের আশ্রয় নেওয়ার নয়, বরং পাকিস্তানি তীর্থযাত্রীদের কারবালায় যাওয়ার দৃশ্য।

Title:পাকিস্তানি তীর্থযাত্রীদের ইরান হয়ে ইরাকের কারবালা যাওয়ার ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে শেয়ার
Written By: Nasim AResult: False