
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইজরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিলেন মা ও তার পাঁচ সন্তান। ছবিতে দেখা যাচ্ছে বোরখা পরিহিত একজন মহিলা হাতে বন্দুক নিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে এবং তার পেছনে পাঁচ জনকে বন্দুক হাতে দেখা যাচ্ছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “ইসরাইলের সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিলেন মা ও পাঁচ সন্তান।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং ভুয়ো। ২০১৩ সালের একটি ছবিকে সম্প্রতির ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের জের ধরে ১১ দিন ধরে ইসরায়েল ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের পাল্টাপাল্টি হামলা চলে। গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার কথা জানিয়ে গত ১০ মার্চ রাত থেকে অধিকৃত এই উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অর্ধশতাধিক শিশু রয়েছে। অপর দিকে ইসরায়েলে হামাসের ছোড়া রকেটে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। অবশেষে, ২১ মে ইসরায়েল প্রশাসন এবং হামাস দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবিটিকে গুগিল সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে একটি আরবি ভাষার ওয়েবসাইটে এর অনুসন্ধান পাওয়া যায়। ২০১৫ সালের ১১ মার্চ এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গুগলে ট্রান্সলেট করে জানতে পারি এখানে বহু প্রাচীন ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ এবং কিভাবে পুরুষদের সাথে প্যালেস্তাইনি মহিলারা এই লড়াইয়ে কাঁধে কাঁধ মেলাচ্ছে সেই সমস্ত বিষয় লেখা রয়েছে।

এরপর প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে প্ল্যালেস্তাইনের জঙ্গি সংগঠন ‘আল-কুদস ব্রিগেড’-এর ওয়েবসাইটে এই ছবিটি দেখতে পাই। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বরের আরবি ভাষার এই প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, প্যালেস্তাইনি খানসার রাতে উম্মে ইহাব ব্যানার নামে এই মহিলা তার মৃত সন্তানদের সম্মান জানাতে তাদের অস্ত্র নিয়ে বেরিয়ে যান। তার সন্তানদের জেরুজালেমের ব্রিগেডে মৃত্যু হয়, এদিন তিনি ওই ব্রিগেড পরিদর্শনে যান। উম্মে ইহাব ‘আল-কুদস’-এর সদস্যদের মধ্যে খাবারও বিলি করেন। ওই জঙ্গি সংগঠন ওই মহিলার চার সন্তান এবং স্বামীর বলিদানের সম্মানে তাকে একটি স্মারক প্রদান করেন। তার পঞ্চম ছেলে মাহমুদও এদিন তার মায়ের সাথে ব্রিগেডে যান।


নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত সত্য নয়। ২০১৩ সালের একটি ছবিকে সম্প্রতির ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:২০১৩ সালের ছবিকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: False