
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি হাফিজ সাঈদের মতো দেখতে এবং দাবি করা হচ্ছে, এটি লস্কর-ই-তইয়েবা’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদের অপারেশন সিঁদুর-এর পরের সাক্ষাৎকার।
ভিডিওটি শেয়ার করে এক ফেসবুক ইউজার লিখেছেন,”ট্রেররিজম যে পাকিস্তানে তৈরী হয়, পাকিস্তান যে ট্রেররিজমের জন্মদাতা সেটা আবারও প্রমান হলো, এই আতঙ্কবাদী কে পাকিস্তানের মাটিতে দেখে। এবং পাকিস্তানের সেনা তার সুরক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে। #IslamicTerrorism #OperationSindoor #indianarmy #indianairforce #indiannavy #indiandefence Narendra Modi।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি হাফিজ সাঈদের সাংবাদিক সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি ২০১৭ সালের, যার অপারেশন সিন্ধুর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওতে থাকা লোগো ‘AP’ এবং হাফিজ সাঈদের সাক্ষাৎকারকে মাথায় রেখে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে হুবহু এই ভিডিওটি ‘AP Archive’-এর ইউটিউব চ্যানেলে পেয়ে যায়। ভিডিওটি ৫ ফেব্রুয়ারি,২০১৭, তারিখে আপলোড করা হয়েছে এবং শিরোনামে লেখা হয়েছে,”গৃহবন্দী পাকিস্তান দাতব্য নেতা।“
ভিডিওর বিবরনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভিডিওটি আসলে ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের। পাকিস্তান একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত একটি দাতব্য সংস্থার নেতাকে গৃহবন্দী করেছে।
হাফিজ সাঈদ, যার জামাত-উদ-দাওয়া লস্কর-ই-তইয়েবা’র মুখোশ হিসেবে পরিচিত — সেই গোষ্ঠী যেটি ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার জন্য দায়ী — তাকে চারজন সহযোগীসহ গৃহবন্দী করা হয়েছে।
পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা আজম সুলেমান এই পাঁচজনকে ৯০ দিনের জন্য আটক রাখার নির্দেশ দেন, সরকারের পক্ষ থেকে জামাত-উদ-দাওয়া এবং এর সহযোগী সংস্থা ফালাহ-ই-ইনসানিয়াত ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর।
হাফিজ সাঈদ মার্কিন সরকারের ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছেন, এবং তার সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য ১ কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে লস্কর-ই-তইয়েবা এবং অন্যান্য ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে সহ্য করে এসেছে, কারণ এগুলোকে ভারতবিরোধী মিত্র হিসেবে দেখা হয়।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ২০০৮ সালে এই দাতব্য সংস্থাটিকে “সন্ত্রাসী ফ্রন্ট সংগঠন” হিসেবে চিহ্নিত করে।
‘Zee News’, ‘Arab News’ আরও কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে হাফিজ সাঈদের সাংবাদিক সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি ৩১ জানুয়ারি,২০১৭, তারিখে আপলোড করে একই তথ্য জানানো হয়েছে।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, হাফিজ সাঈদের সাক্ষাৎকার দেখানো যে ভিডিওটি সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ২০১৭ সালের। এই ভিডিওটির অপারেশন সিন্ধুর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। এটি একটি পুরনো ফুটেজ, যেটিকে বর্তমানে বিভ্রান্তিকরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

Title:অপারেশন সিঁদুরের প্রসঙ্গে হাফিজ সাঈদের পুরনো ভিডিও ভাইরাল
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: Missing Context