না, প্যালেস্তাইনের সমর্থনে কোকা-কোলা ফেলে দিচ্ছে না মালয়েশিয়া

False International

যখনই কোনও দুটি দেশের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে বা মতবিরোধ শুরু হয় তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দুই পক্ষের সমর্থকরা বয়কট অভিযানে নামে। অর্থাৎ, শত্রু দেশের পণ্য ব্যবহার করা হবে না এই দাবির সাথে ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট ভাইরাল হয়। ইজরায়েল- প্যালেস্তাইনের সংঘাতের সময়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এজাতীয় পোস্টের বেশিরভাগই হয় ভুয়ো। যেমন সম্প্রতি একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, প্যালেস্তাইনের সমর্থনে ইজরায়েলি পণ্য কোকা-কোলা ফেলে দিচ্ছে মালয়েশিয়া। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি রাস্তার ওপর অনেকগুলি কোকা-কোলার নতুন বোতল পড়ে রয়েছে এবং রাস্তার শেষ দুটি গাড়ি দাড়িয়ে আছে। 

ভাইরাল পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “ইজরায়েলের কোকাকলা বয়কটের ডাকে। এভাবেই সাড়া দিয়েছেন মালয়েশিয়ার জনগণ। এইভাবে কোকাকোলা পেপসি সেভেন আপ বয়কট করুন।“

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ২০২০ সালের একটি সড়ক দুর্ঘটনার ছবিকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘাতের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে। 

ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ

প্রসঙ্গত, জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইজরায়েলি পুলিশের সঙ্গে প্যালেস্তাইনিদের সংঘর্ষের জেরে ইজরায়েল ও গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের পাল্টাপাল্টি হামলা চলে। গাজা থেকে ইজরায়েলের দিকে রকেট ছোড়ার কথা জানিয়ে গত ১০ মার্চ রাত থেকে অধিকৃত এই উপত্যকায় বিমান হামলা চালায় ইজরায়েল। ইজরায়েলের হামলায় অন্তত ২৩২ জন প্যালেস্তাইনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অর্ধশতাধিক শিশু রয়েছে। অপর দিকে ইজরায়েলে হামাসের ছোড়া রকেটে ১৩ জন নিহত হয়েছে। অবশেষে, ২১ মে ইজরায়েল প্রশাসন এবং হামাস দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে।

তথ্য যাচাই

এর আগে ফেসবুকে এই জাতীয় একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হয়েছিল কোকা-কোলা, পেপসি এবং সেভেন আপ হল ইজরায়েলি দ্রব্য। তথ্য যাচাই করে আমরা প্রমাণ করি এগুলির একটিও ইজরায়েলর পণ্য নয়। নিচে এই তিনটি পানীয়র উৎপত্তিস্থল এবং প্রস্তুতকারকের তালিকা দেওয়া হল। 

  • কোকা-কোলাঃ কোকা-কোলা কোম্পানি হল এই পানীয়র প্রস্তুতকারক। এটি একটি জার্মান সংস্থা। এটি বিখ্যাত একটি আন্তর্জাতিক খাদ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি। 
  • পেপসিঃ এই বিখ্যাত ঠান্ডা পানীয়র উৎপত্তিস্থল হল আমেরিকা এবং এর প্রস্তুতকারক হল পেপসিকো। 
  • সেভেন আপঃ ডক্টর পেপার নামে একটি আমেরিকান কোম্পানি হল সেভেন আপ-এর প্রস্তুতকারক।

অতএব, স্পষ্ট হয়ে যায় কোকা-কোলা ইজরায়েলি পণ্য নয়। এরপর ভাইরাল ছবির সত্যতা যাচাই করতে এটিকে গুগল সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে ‘এবিএস-সিবিএন নিউজ’ নামে একটি সংবাদমাধ্যমের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে এই ছবিটি দেখতে পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ১৬ এপ্রিলের এই টুইটে ফিলিপিনো ভাষায় লেখা রয়েছে “বৃহস্পতিবার ফিলিপিন্সের লেগুনা শহরে দুটি ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কায় গাড়িতে থাকা ঠান্ডা পানীয়র প্রচুর বোতল রাস্তায় পড়ে যায়”। 

আর্কাইভ

জিএমএ নিউজ’ আরেকটি সংবাদমাধ্যমের ২০২০ সালের ফেসবুক পোস্টে এই পোস্টটি দেখতে পাওয়া যায়। সেখানেও একই দাবি করা হয়েছে। 

https://www.facebook.com/gmanews/posts/10158658691001977

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত সত্য নয়। ২০২০ সালের একটি সড়ক দুর্ঘটনাকে ইজরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়া পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Avatar

Title:না, প্যালেস্তাইনের সমর্থনে কোকা-কোলা ফেলে দিচ্ছে না মালয়েশিয়া

Fact Check By: Nasim A 

Result: False


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *