
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, তৃনমূল সমর্থকরা একটি শিশুকে আহত করেছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে নীল রঙের জামা পরিহিত একটি শিশু রক্তাত অবস্থায় রয়েছে। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা দুধের শিশু বাচ্চাদের কেউ ছেড়ে কথা বলল না বাংলা য় মানসিকতা দিনের পর দিন হারিয়ে যাচ্ছে রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ রাষ্ট্রপতি শাসন দেওয়া হোক।তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা দুধের শিশু বাচ্চাদের কেউ ছেড়ে কথা বলল না বাংলায় মানসিকতা দিনের পর দিন হারিয়ে যাচ্ছে রাজ্যপালের কাছে অনুরোধ রাষ্ট্রপতি শাসন দেওয়া হোক”।
তথ্য যাচাই করে আমরা জানতে পারি এই দাবি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। ২০১৯ সালের বাংলাদেশের একটি ট্রেন দুর্ঘটনার ছবিকে বাংলার নির্বাচন- পরবর্তী সন্ত্রাসের সঙ্গে জুড়ে ভুয়ো পোষ্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের পরে ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে উত্তাল হয়ে পড়েছিল রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো পোষ্ট, ভিডিও ও ছবির যেন সুনামি নেমেছিল। সাধারন মানুষ থেকে বড় বড় রাজনৈতিক নেতারা ভিত্তিহীন দাবির সাথে ফেক নিউজ শেয়ার করেছিল। ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সেই সমস্ত দাবির সত্যতা যাচাই করে সেগুলিকে ভুয়ো প্রমাণ করে। সম্প্রতি ফের ওই জাতীয় পোষ্ট ফেসবুকে জিইয়ে উঠেছে।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রথমে ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে আমরা “প্রথম আলো” নামে সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে এই ঘটনার উল্লেখ পাই এবং সেই প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি সেই শিশুটির নাম হল “মাহিমা”। এটি বংলাদেশের একটি ট্রেন দুর্ঘটনার ছবি।
মাহিমার বাবার নাম হল মাইনুদ্দিন এবং মা-এর নাম কাকলি আক্তার। ১৮ নভেম্বর ২০১৯ রাত প্রায় পৌনে তিনটার দিকে কসবার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথা ও সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে। এই দুরঘতনায়ম ১৬ জন প্রান হারায় তার মধ্যে এই শিশুটির মা-ও একজন।
মাইনুদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সিলেটের হজরত শাহজালাল ও হজরত শাহপরানের মাজার জিয়ারত করতে যান তাঁর স্ত্রী কাকলি আক্তার, মেয়ে মাহিমা আক্তার, মামা জাহাঙ্গীর মাল, মামি আমাতন বেগম ও মামাতো বোন মরিয়ম। তারপর সিলেট থেকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চাঁদপুরের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। চাঁদপুর থেকে ট্রলারে করে তাঁদের শরীয়তপুরের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনায় তাঁর স্ত্রী, মামি ও মামাতো বোন মারা যান।“

তারপর কিওয়ার্ড সার্চ করে “যুগান্তর” সংবাদমাধ্যম-এর একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাই এবং সেখানেও একই কথা জানতে পারি। এছাড়া জানতে পারি আহত মাহিমার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন বাংলাদেশের পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০১৯ সালের বাংলাদেশের ট্রেন দুর্ঘটনার ছবিকে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন-পরবর্তী হিংসার সাথে যুক্ত করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:বাংলাদেশের ট্রেন ছবিকে পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা দাবি করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে
Fact Check By: Nasim AResult: False