সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভুয়ো পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বিজেপি কর্মকর্তা কুশ ক্ষেত্রপালকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি গাছের ডালে একজন ব্যক্তি ফাঁস লাগানো অবস্থায় গাছ ঝুলছে এবং নিচে দুজন পুলিশ এবং কয়েকজন লোক দাড়িয়ে রয়েছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার মির্জাপুরের রায়বাঘিনীতে আরও একজন বিজেপি কর্মকর্তাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে”।

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। কুশ ক্ষেত্রপালের দেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে এবং এর সাথে কোনও রাজনৈতিক যোগ আপাতত খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার।

টুইট আর্কাইভ
ফেসবুক আর্কাইভ

উল্লেখ্য, গত ২ মে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলা ঘোষণা হয়েছে। তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলির সমর্থকদের সংঘর্ষের খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কিছু সত্যি ঘটনা হলেও বেশিরভাগই ভুয়ো। এর আগে বিজেপির অফিসিয়াল পেজ থেকে একটি ছবিকে শেয়ার করে ভুয়ো খবর ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো ওই দাবির তথ্য যাচাই করে সেটি ভুল প্রমাণ করে।

তথ্য যাচাই

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে গুগল সহ বিভিন্ন রিভার্স ইঞ্জিনে ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে কোনও যথাযথ পাওয়া যায় না। এরপর প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদমাধ্যম ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র একটি প্রতিবেদনে কুশ ক্ষেত্রপাল নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু নিয়ে একটি খবর দেখতে পাই। ১০ মে’র এই প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, ৯ মে সন্ধ্যায় কোতুলপুর থানার রায়বাঘিনী গ্রামের একটি পুকুরপাড়ে কুশ ক্ষেত্রপাল নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। ২৬ বছরের কুশ ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। ৭ মে থেকেই নিখোঁজ ছিলেন ওই যুবক। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বুথ এজেন্ট ছিলেব কুশের দাদা। পরিবারের দাবি, রাজনৈতিক মতবিভেদের কারনেই তাদের ছেলেকে খুন করা হয়েছে। হত্যার অভিযোগ এনে কাঠগড়ায় তোলা হয় তৃনমূলকে।

প্রতিবেদন আর্কাইভ

এরপর আমরা কোতুলপুর থানার অফিসার ইন-চার্জ মানস চ্যাটার্জি’র সাথে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের জানান, “সোশ্যাল মিডিয়ার দাবিটি ভুয়ো। কুশ ক্ষেত্রপালকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়নি। তার দেহ একটি পুকুরপাড়ে পাওয়া যায়।“ তিনি আমাদের জানান বাঁকুড়ার উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মীরা এই ঘটনা তদন্ত করছেন।

এরপর ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ’র সাথে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানান, “সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবিটি ভাইরাল তার সাথে কুশ ক্ষেত্রপালের কোনও যোগাযোগ নেই এবং ভাইরাল হওয়া ছবিটি কোথাকার তা আমার জানা নেই। কুশ ক্ষেত্রপালের দেহ একটি পুকুরের পাড় থেকে উদ্ধার হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে কোনও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। জলে ডুবেই তার মৃত্যু হয়েছে।“ এই ঘটনার কোনও রাজনৈতিক দিক আছে কিনা জিজ্ঞাসা করায় তিনি বলেন, “আপাতত আমাদের তদন্তে এই ঘটনার সাথে কোনও রাজনৈতিক যোগ পাওয়া যায়নি। এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বলেই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত পোস্টটি ভুল। কুশ ক্ষেত্রপালের দেহ একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে এবং এর সাথে কোনও রাজনৈতিক যোগ আপাতত খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার।

Avatar

Title:ভাইরাল ছবিটি কুশ ক্ষেত্রপালের দেহ উদ্ধারের ছবি নয়ঃ বাঁকুড়া পুলিশ সুপার

Fact Check By: Rahul A

Result: Missing Context