
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা ১৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন নবনির্বাচিত মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন! সম্প্রতি ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার এমনই ভিত্তিহীন দাবি করা হচ্ছে। পোস্টটিতে লেখা রয়েছে,
“ওবামা প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্ট এই বাইডেন লোকটাই গুজরাট দাঙ্গার জন্য গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা যাওয়ার ভিসা ১৫ বছরের জন্য বাতিল করে দিয়েছিল 😁”।

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় মোদির নীরব ভূমিকা ছিল দাবি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সালে নরেন্দ্র মোদির ভিসা বাতিল করে দেয়। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ছিলেন জর্জ বুশ এবং উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন ডিক চেনি।
তথ্য যাচাই
প্রথমেই গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে এই মর্মে বেশ কিছু প্রতিবেদন দেখতে পাই। এর মধ্যে সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-এর ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ তারিখের একটি প্রতিবেদন দেখতে পাই যার শিরোনামে লেখা রয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রে মোদির প্রবেশ নিষিদ্ধঃ ভিসা বাতিল”। প্রতিবেদনটিতে লেখা রয়েছে,
ভারতের গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদির বিতর্কিত ভূমিকার থাকায় যুক্তরাষ্ট্র নরেন্দ্র মোদির ভিসা বাতিল করে।

এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেস্ট বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের আর্কাইভে ২০০৫ সালে নরেন্দ্র মোদির ভিসা বাতিল করার বিষয়টির উপযুক্ত ব্যাখা সহ একটি প্রেস বিবৃতি খুঁজে পাই। এই বিবৃতিতে লেখা রয়েছে,
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী (তৎকালীন) নরেন্দ্র মোদির ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় মোদির ভূমিকা থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনে’ দায়ী কোনো বিদেশি কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবে না।
২০০৫ সালে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ছিলেন জর্জ বুশ এবং উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন ডিক চেনি।

২০১৪ সাল অবধি মোদির ভিসা বাতিল ছিল। এরপর ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদ পাওয়ার পর তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা মোদিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রন জানান। স্বাভাবিকভাবেই সেসময় মোদিকে ভিসার ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তখন ওবামার উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন জো বাইডেন।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় মোদির নীরব ভূমিকা ছিল দাবি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০০৫ সালে নরেন্দ্র মোদির ভিসা বাতিল করে দেয়। সেসময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ছিলেন জর্জ বুশ এবং উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন ডিক চেনি।