
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বিজেপি বিধায়ককে জুতা-চপ্পল-লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করলেন স্থানীয় মহিলারা। পোস্টে মোট দুটি ছবি রয়েছে যার প্রথমটিতে দেখা যাচ্ছে গেরুয়া পাঞ্জাবী পরিহিত একজন লোককে ঘিরে রয়েছে বেশ কয়েকজন মহিলা এবং একজন পুলিশকর্মী সেই লোকটিকে সেই ভিড়ের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টায় রয়েছে। দ্বিতীয় ছবিতে দেখা যাচ্ছে লোকটির গেরুয়া পাঞ্জাবীটি ছেড়া অবস্থায় রয়েছে। পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে “ উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বিজেপি বিধায়ক’কে জুতা-চপ্পল-লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করলেন মহিলারা।😂 এই ঘটনার নিন্দা করি, কেননা আমাদের মানসিকতা বিজেপির মত নয়। পাশাপাশি, এটাও মনে রাখার দরকার রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এমন একটা দিন আসবে জনগণ বিজেপি নেতাদের তাড়া করে মারবে। সেই ভবিষ্যৎবাণী সত্যি প্রমাণিত হচ্ছে। এবং বিজেপির বিদায় ঘন্টা বাজতে শুরু করেছে। লেখা: Sakil Ahmed (me)”।
তথ্য যাচাই করে আমরা জানতে পারি পোস্টে করা দাবিটি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। ২০১৮ সালের পুরনো ছবিকে ভিত্তিহীন দাবির সাথে যুক্ত করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে আমরা ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে আমরা সন্তুষ্টিজনক কিছু পাইনা। তারপরে আমরা প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে বেশ কয়েকটি সংবাদ্ মাধ্যমে এই ছবি দেখতে পাই। তাদের মধ্যে সংবাদ মাধ্যম ‘দি ভয়েস হিন্দি নিউজ’- এর ৫ই জুন ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে থাকা এই ছবির পরিপ্রেক্ষিতে লেখা থেকে জানতে পারি ওই গেরুয়া পাঞ্জাবী পরিহিত লোকটির নাম হল মদন বর্মা। মদন বর্মা ছিলেন সেই এলাকার একজন বিজেপি নেতা। গ্রামে তিনটে রেশন দোকান থাকা সত্ত্বেও যখন মহিলার রেশন পেতে অসুবিধা হচ্ছিল এবং রেশন ডিলার রেশন নিয়ে কালাবাজারি করছিল এই অভিযোগ নিয়ে এক মহিলা মদন বর্মা কে অভিযোগ জানালে নেতা মদন বর্মা তার যোগ্য ব্যাবস্থা না নিয়ে রেশন ডিলারের পক্ষপাতিত্ব করেন। এই ঘটনাই উত্তপ্ত হয়ে সেই মহিলা তাকে চড় থাপ্পর মারতে শুরু করেন এবং পরে সবাই মিলে তাকে দৌড়িয়ে দৌড়িয়ে মারেন। ফলস্বরূপ মদন বর্মার পাঞ্জাবী ছিঁড়ে যাই।

এছাড়া, ‘গাজরাউলা টাইম্স’ নামে একটি হিন্দি সংবাদ মাধ্যমের ৫ই জুন ২০১৮ এর প্রতিবেদনে একই কথা জানতে পারি।

ইউটিউবে কিওয়ার্ড সার্চ করে নিউজ ১৮ ইন্ডিয়া সংবাদ মাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেলে ৬ জুন ২০১৮ সালে আপলোড করা একটি ভিডিওতে এই ঘটনার উল্লেখ পাই।
পোস্টে দাবি করা হয়েছে লোকটি হল বিধায়ক। এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা মাই নেতা ওয়েবসাইটে যাই এবং সেখানে তার বিধায়ক হওয়ার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। ২০১৮ সালের পুরনো ছবিকে সম্প্রতির ঘটনা দাবি করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:২০১৮ সালের মারধরের ঘটনাকে বর্তমানের দাবি করে ভুয়ো পোষ্ট ভাইরাল
Fact Check By: Nasim AResult: Missing Context