২০১৮ সালের পুরনো ভিডিওকে সান্দেশখালির ঘটনার সাথে জুড়ে শেয়ার 

False Political

উত্তর ২৪ পরগনার বিধানসভা কেন্দ্র সন্দেশখালি বিগত কিছুদিন থেকে উত্তপ্ত হয়ে আছে। এলাকার মহিলারা যৌন হয়রানি ও জমি দখলের অভিযোগ তুলেছে টিএমসির স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। এই অপরাধ রুখতে পুলিশ সাহায্য করেনি গ্রামবাসীদের বলে জানিয়েছে গ্রামবাসীদের একাংশ। ইতিমধ্যে জাতীয় মহিলা কমিশন পরিদর্শন করে নিজেদের রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন যেখানে মহিলাদের সাথে যৌন হয়রানির কথা স্পষ্ট করেছেন। এই পরিস্থিতিতে কথার যুদ্ধ স্বাভাবিক ভাবেই তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে এই অপরাধের নীরব দর্শক বলে অভিযুক্ত করছেন বিরোধীরা এবং অপরপক্ষে, মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন যে বিরোধীরা সন্দেশখালিতে দাঙ্গা উসকে দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে একটি ভিডিও শেয়ার করে সেটিকে সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক মহিলা সংবাদমাধ্যমকে কিছু কথা বলতে যাচ্ছিলেন ঠিক সেই মুহূর্তেই এক ব্যাক্তি ক্যামেরার সামনেই মহিলাকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেন। 

ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”সন্দেশখালির অত্যাচারিত মহিলাদের সত্যিটা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। মুসলমানরা হিন্দু মহিলাদের মারধর করছে।“  

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি যে ভিডিওটি ২০১৮ সালের এবং সম্প্রতির সন্দেশখালি খবরের সাথে সম্পর্কিত নয়। 

ফেসবুক পোস্টফেসবুক পোস্ট 

তথ্য যাচাইঃ

ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেম গুলোকে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির মিডিয়ার সহ-ইনচার্জ কেয়া ঘোষ-এর এক্স (টুইটার) হ্যান্ডেলে ভিডিওটি পাওয়া যায়। তিনি ভিডিওটি ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন- এই সেই মহিলা নীলিমা দে সরকার যাকে তৃণমূল নেতা আরশাদুজ্জামান “লাথি” মেরেছিলেন। দেখুন কিভাবে তার সহযোগী কুতুবউদ্দিন তাকে প্রকাশ্যে মারধর করছে যখন সে ঘটনাটি মিডিয়ার কাছে তুলে ধরছে। 

উপরোক্ত তথ্যগুলোকে সূত্র ধরে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও কেন্দ্রিক অনেক সংবাদ প্রতিবেদন পেয়ে যায়। ‘জি২৪ ঘণ্টা’র ১ সেপ্টেম্বর,২০১৮, তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভিডিওর মহিলার নাম নীলিমা দে সরকার, একজন বিজেপি নেত্রী। তৎকালীন সময়ে বিজেপি কর্মীরা ১২ ঘণ্টার বন্ধ ডেকেছিল। এই ডাকে সাড়া দিয়ে বারাসাতের পীরগাছা রেলগেট অবরোধে সামিল হয়েছিলেন তিনি। এই অবরোধ তুলতে স্থানীয় টিএমসি নেতা আশারাদুজ্জামান নীলিমাকে লাথি মেরেছিল। এই ঘটনার কিছু দিন পর নীলিমা তার অভিযোগ সংবাদমাধ্যমকে ব্যাক্ত করতে গেলে আশারাদুজ্জামান-এর অনুগামী কুতুবুদ্দিন ক্যামেরার সামনেই তাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল। 

জি২৪ ঘণ্টা প্রতিবেদন আর্কাইভ 

‘দি স্টেটসম্যান’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, উত্তর দিনাজপুর জেলায় দুই ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে ১২ ঘন্টার বনধের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। 

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

অন্যান্য প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো দেখতে ক্লিক করুন এখানে, এখানে 

তথ্যের ভিত্তিতে প্রমানিত হয় যে, ভিডিওটি পুরনো ও সন্দেশখালিতে মহিলা অত্যাচারের সাথে সম্পর্কিত নয়। 

নিষ্কর্ষঃ 

তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছে যে ভিডিওর সাথে করা দাবিটি ঠিক নয়। ক্যামেরার সামনে মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেওয়ার ভিডিওটি পুরনো ও সন্দেশখালি ঘটনার সাথে সম্পর্কিত নয়। 

Avatar

Title:২০১৮ সালের পুরনো ভিডিওকে সান্দেশখালির ঘটনার সাথে জুড়ে শেয়ার

Fact Check By: Nasim Akhtar 

Result: False


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *