
বারাসাতে বাচ্চা চুরির অভিযোগে সোশ্যাল মিডিয়াই ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক পোস্ট। এই অভিযোগ নিছকই গুজব বলে বারাসাত পুলিশ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে। এই গুজবের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিলি করেছে বারাসাত পুলিশ। বাচ্চা চুরির খবরের এই আবহে এক শিশুর ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, বর্ধমান স্টেশনে অচেনা কয়েকজন ব্যাক্তি বাচ্চাটিকে অপহরন করে নিয়ে যাচ্ছিল সেই সময় যাত্রীরা তাকে উদ্ধার করে।
ভাইরাল এই ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”এই ছোট্ট শিশুটিকে বর্ধমান রেলস্টেশনে ট্রেনে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল অচেনা কয়েকজন। যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্দেহে এই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এই ছবিটি সকল সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে ফরোয়ার্ড করুন। যাতে এই শিশুর পরিবারের সদস্যরা বর্ধমান রেলস্টেশনে যোগাযোগ করতে পারে। শিশুটিকে রেলস্টেশনে নিরাপদে রাখা হয়েছে…. বেশি বেশি করে Post টা Share করুন এবং বাচ্চাটাকে তার পরিবারের কাছে পাঠাতে সাহায্য করুন। Contact No:- 8818070080/8396922725।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি যে দাবিটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। হরিয়ানারা আম্বালা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
তথ্য যাচাইঃ
ফেসবুক পোস্টের দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রথমে ক্যাপশনে দেওয়া ফোন নাম্বার দুটোর সাথে যোগাযোগ করি। ফলে, সন্তোষজনক কোন তথ্য পাওয়া যায়না।
তারপর আমরা ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, বেশ কিছু এক্স, ইন্সতা, ফেসবুক প্রোফাইলের পোস্ট থেকে জানা যায় যে- বরারা রেলস্টেশনে এই ছোট্ট শিশুটিকে ট্রেনে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল কয়েকজন অচেনা ব্যক্তি। যাত্রীদের কাছ থেকে তার পরিচয় জানতে চাওয়ার পর সন্দেহে ঐ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
দৈনিক ভাস্করের ২৪ এপ্রিল,২০২৪, তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ছবির শিশুর বয়স ছয়। ছয় বছর বয়সী এই শিশুকে হরিয়ানার আম্বালা সফরগামী ট্রেন থেকে উদ্ধার করা হয়। এক অচেনা ব্যাক্তির কাছে ছিল এই শিশু। ট্রেনের যাত্রীরা সেই ব্যাক্তিকে শিশু সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করলে সন্তোষজনক উত্তর না পাওয়াই যাত্রীরা সেই ব্যাক্তির উপর চড়াও হয় এবং মারধরও করে। পরে আরপিএফকে জানানো জানিয়ে শিশুসহ অভিযুক্ত ব্যাক্তিকে বরারা স্টেশনে নামিয়ে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয় যে, অভিযুক্ত ব্যাক্তি নিজেকে শিশুর বাবা বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। অভিযুক্ত ব্যাক্তি জানিয়েছেন যে, তার এবং স্ত্রীর মধ্যে মনকষাকষির জেরে স্ত্রী কিছু না জানিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। স্ত্রীকে খুঁজতে বাচ্চা সহ তিনি আম্বালা যাচ্ছিলেন। শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন রঞ্জিতা জানিয়েছেন যে, উপযুক্ত প্রমান ছাড়া বাচ্চাটিকে কারও কাছে হস্তান্তর করা হবে না।
নিষ্কর্ষঃ
তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বর্ধমান রেলস্টেশন থেকে বাচ্চা উদ্ধার করার দাবিটি ভুয়ো।

Title:বর্ধমান রেল স্টেশন থেকে উদ্ধার শিশুর ছবি? জানুন ভাইরাল ছবির সত্যতা
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False