
চলতি মাসের ১১ তারিখ অর্থাৎ ১১ আগস্ট তারিখে মুক্তি পেয়েছে সানি দেওল ও আমিশা পাটেল অভিনীত ব্লকবাস্টার সিনেমা গাদার-এর দ্বিতীয় পার্ট গাদার ২ যা এখন বক্স অফিসে তাণ্ডব মাচিয়ে ব্লকবাস্টার তকমা পেতে চলেছে। এই সিনেমা দেখতে সিনেমাহল গুলোতে লোকজনের ভিড় উপচে পড়ছে। এই প্রসঙ্গেই একটি ভিডিও ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হচ্ছে যেখানে সিনেমা হলের মধ্যে সিনেমা চলাকালীন দর্শকদের নিজেদের মধ্যে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, গাদার ২ সিনেমা চলাকালীন এক সংখ্যালঘু ব্যাক্তি পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান তোলায় অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন তাকে মারধর করতে শুরু করেছিল।
ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,” গদর-২ মুভি চলাকালীন কোনো একজন সংখ্যালঘু পাকিস্তান জিন্দাবাদ” বলে ফেলেছিলো…. বাকিটুকু জনগণ ক্যালেন্ডার বানিয়ে দিয়েছে 😜।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি পোস্টের ছবিটি ভুয়ো। পোস্টের দাবিটি মিথ্যা। বেরেলির সিনেমা হলে পাকিস্তান জিন্দাবাদের স্লোগান ওঠেনি।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ইউটিউবে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলে, ভাইরাল ভিডিও কেন্দ্রিক একটি ভিডিও উপস্থাপন ‘এবিপি গঙ্গা’র চ্যানেলে পাওয়া যায়। ১২ আগস্ট তারিখে আপলোড করা এই উপস্থাপনে জানানো হয় যে, উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বেরেলি শহরের প্রসাদ সিনেমা হলে গাদার ২ সিনেমা চলাকালীন দুজন দর্শকের মধ্যে কিছু নিয়ে তর্কাতর্কি হয় এবং বিবাদ এতটাই বেড়ে যায় তারা মারধরে লিপ্ত হয়ে যায়।
উপরোক্ত তথ্যকে সূত্র ধরে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে বেশ কিছু প্রতিবেদনে সিনেমা হলে মারধরের ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। দৈনিক ভাস্করের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সানি দেওলের সিনেমা গদর ২-এর রাত ৯-১২ টার শো চলছিল। এরপর সিনেমার একটি দৃশ্য নিয়ে দুইজনের মধ্যে তর্ক হয় এবং সেই বিবাদ এতটাই বেড়ে যায় যে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। ওই যুবকদের মধ্যে একজন মাদকাসক্ত ছিল এবং লড়াইয়ের সময় একজন বেল্ট দিয়ে আক্রমণ করেছিল। এ কারণে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এরপর শো বন্ধ করতে বাধ্য হয় সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি জানাজানি হলে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ আসার সঙ্গে সঙ্গে বেল্ট দিয়ে আঘাতকারী অভিযুক্ত পালিয়ে যায়।
উপরের প্রতিবেদনগুলোতে কোথাও সিনেমা হলে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান তোলার কথা বলা হয়নি, হিন্দু-মুসলিমের কোণও উল্লেখ করা হয়নি।
এরপর ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র সিং-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানান যে,”ভাইরাল দাবি মিথ্যা। সিনেমা চলাকালীন পাকিস্তান জিন্দাবাদের মতো কোনো স্লোগান ওঠেনি। একজন ব্যক্তি সিনেমা চলাকালীন একটি দৃশ্যের ছবি তুলছিলেন এবং তা নিয়ে অন্য ব্যক্তি একটি বিবাদ শুরু করেন। বিবাদ এতটাই বেড়ে যায় যে উভয়ের মধ্যে মারামারি হয়। এতে হিন্দু-মুসলিম কোণ নেই।“
নিষ্কর্ষঃ
তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ভাইরাল ভিডিও নিয়ে যে দাবি করা হয়েছে তা মিথ্যা। বেরেলির সিনেমা হলে পাকিস্তান জিন্দাবাদের স্লোগান ওঠেনি। এর মধ্যে কোনো সাম্প্রদায়িক কোণ নেই

Title:সিনেমা হলে গাদার ২ চলাকালীন মারধরের ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে শেয়ার করা হচ্ছে
Written By: Nasim AResult: False