
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, বাংলাদেশে হিন্দু পরিবারের পাকা ধানের জমিতে আগুন লাগিয়ে নষ্ট করেছে মুসলমানরা। ভিডিওতে ফাঁকা মাঠের মধ্যে ছাইয়ের স্তুপ দেখা যাচ্ছে। সেই স্তুপের পাশে বসে ক্রন্দনরত এক ব্যক্তিকে সান্তনার ভঙ্গিতে উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন অন্য এক ব্যক্তি। ক্যামেরার সামনে এক মহিলা এবং সেই ব্যক্তি তাদের তাদের ধান পোড়ান হয়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং কাঁদছেন।
ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”বাংলাদেশী ইসলামপন্থীরা হিন্দুদের পাকা ধান ক্ষেতে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। আর কতোক্ষন সহ্য করবেন আপনি?।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা দাবিটিকে বিভ্রান্তিকর হিসেবে পেয়েছি। পীড়িত ব্যক্তি হিন্দু নন। তিনি মুসলিম। তার নাম নাসিম মিয়াঁ।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওটিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় পীড়িত ব্যক্তি ফসলের ফলন ভালো হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি ‘আলহামদুলিল্লাহ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহর কৃপা’ বলছেন যা সাধারণত মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা ব্যবহার করে থাকে। এই পর্যবেক্ষণ ভিডিওর সাথে করা দাবিটিকে নিয়ে মনে সন্দেহের জাগরন ঘটায়।
ভাইরাল ভিডিওর সম্পর্কে বিশদে জানতে গুগলে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চ করি। ফলে, এই ভিডিওকে ঘিরে বাংলাদেশের বেশ কিছু সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ‘thenews24’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পীড়িত ব্যক্তির নাম নাসিম মিয়াঁ। বাড়ি হল কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামে। মোট তিন বিঘা জমি লিজে নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন তিনি। তার মধ্যে দেড় বিঘা জমির ধান শুকনোর জন্য মাঠের মধ্যেই স্তুপ করে রেখেছিলেন। ৪ ডিসেম্বরের রাতে দুর্বৃত্তরা সেই ধানের স্তুপে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। যার দরুন সেই ধান ভস্মে পরিনত হয়েছিল।
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম ‘Ekattor TV’, ‘Channel 24’-এর সংবাদ উপস্থাপনেও একই তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ উপস্থাপন গুলো নীচে দেখুনঃ
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বাংলাদেশে মুসলমানদের দ্বারা হিন্দু পরিবারের ধানের স্তুপ পুড়িয়ে দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা। ভাইরাল ভিডিওটিতে কোনো সাম্প্রদায়িক কোণ নেই। পীড়িত ব্যক্তি হিন্দু নন, বরং মুসলিম। তার নাম মুসলিম মিয়াঁ।

Title:বাংলাদেশে মুসলমানদের দ্বারা হিন্দু পরিবারের ধান পুড়িয়ে দেওয়ার দাবিটি মিথ্যা
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False