
ইরান-ইসরায়েল সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ছেলেকে দেশটির জনগণ মারধর করছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, কয়েকজন পুলিশ সদস্য একজন ব্যক্তিকে মেঝেতে ফেলে লাথি, ঘুষি মারছে এবং ভিড়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
অন্য এক পোস্টে দাবি করা হয়েছে- নেতানিয়াহুর পরিবার বিশ্বের সেরা বাঙ্কারে লুকিয়ে ছিল এবং সেখানে নেতানিয়াহুর ছেলেকে মারধর করা হচ্ছে। ইরানি হামলার কারণে নেতানিয়াহুর ছেলের বিয়ে বাতিল হয়ে গেছে এবং দ্বিতীয়ত, তাকে তার নিজের নাগরিকরা মারধর করেছে।
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি ভুয়ো। ৩ মার্চে ইসরায়েলি সংসদ কনেসেটে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের আগে হামাস হামলায় নিহত ও শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ভিডিওকে চলমান ইরান ইসরায়েল সংঘর্ষের মাঝে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, এই একই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করন ‘New York Post’-এর ইউটিউব চ্যানেলে পেয়ে যায়। ৪ মার্চ,২০২৫, তারিখে আপলোড করা এই ভিডিও উপস্থাপন অনুযায়ী- সোমবার ইসরায়েলি সংসদ কনেসেটে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের আগে ৭ অক্টোবর হামলায় নিহত ও অপহৃতদের শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংসদের ভেতর থেকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, কীভাবে নিরাপত্তারক্ষীরা অতিথি গ্যালারি থেকে শোকাহত পরিবারগুলোর সদস্যদের জোর করে বের করে দিতে শুরু করে। ওই পরিবারগুলো সরকার ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালের সন্ত্রাসী হামলা প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছিল—এই বিষয়টি তদন্তে একটি রাষ্ট্রীয় কমিশনের দাবি জানাতে এসেছিল।
তৎক্ষণাৎ পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। পরিবারগুলোর সদস্যরাও নিরাপত্তারক্ষীদের ধাক্কা দিতে শুরু করেন। এক উত্তেজিত আত্মীয়কে একজন নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হতে দেখা যায়, অন্যরা আবার দু’জনকে আলাদা করতে চেষ্টা করছিলেন।
Apnews-এর প্রতিবেদনেও একই তথ্য সহ জানানো হয়েছে- ভিডিওটি ৩ মার্চ,২০২৫, তারিখের। জানানো হয়-সোমবার ইসরায়েলি সংসদে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, যখন ৭ অক্টোবর হামলায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের সংসদের একটি অধিবেশনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হয়। ওই অধিবেশনটি হামাসের হামলার সময়কার নিরাপত্তা ব্যর্থতা নিয়ে একটি রাষ্ট্রীয় তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে ছিল।
সংশ্লিষ্ট ভিডিওকে ঘিরে টাইমস অফ ইন্ডিয়া, টাইমস নাও, WION-এর ভিডিও উপস্থাপন গুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ছেলেকে দেশটির সাধারন জনগণ দ্বারা মারধর করার দাবিটি মিথ্যা। ভিডিওটি আসলে ৩ মার্চের, যেখানে ইসরায়েলি সংসদ কনেসেটে ৭ অক্টোবর হামলায় নিহত ও শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীদের ধস্তাধস্তির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।

Title:নেতানিয়াহুর ছেলেকে মারধরের ভিডিও? জানুন ভিডিওর সত্যতা
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False