
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে এক ব্যক্তি চড়-থাপ্পড় মারছে, এমনকি তাকে মেঝেতে ফেলে লাথিও দিচ্ছে। ভিডিওটি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনা এবং হামলাকারী একজন বিজেপি নেতা।
১৬ সেকেন্ডের এই ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”#দেশে এসব কি চলছে, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট প্রশান্ত ভূষণের উপর হামলা, বিজেপি নেতার । #যারা শাসকের চেয়ারে বসে আছে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব। ক্ষমতায় পাওয়ারের থেকে আইনশৃঙ্খলা কে বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে। #ব্রিটিশের জুতো পালিশ করা দলটা দেশটাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে বিজেপি #বিজেপিহটাওদেশবাঁচাও।“
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি হামলার এই ঘটনাটি ২০১১ সালের অক্টোবর মাসের। জম্মু ও কাশ্মীর বিষয়ে প্রশান্ত ভূষণের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়াই ‘ভগত সিং ক্রান্তি সেনা’ নামক এক সংগঠনের তিন সদস্য এই হামলা চালিয়েছিল।
Embed: https://archive.org/details/videos24334180942928586
তথ্য যাচাইঃ
সাম্প্রতিক সময়ে বিজেপি নেতার দ্বারা প্রশান্ত কিশোরের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে আমরা প্রথমে গুগলে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড দিয়ে অনুসন্ধান করি। কিন্তু কোনো প্রতিবেদনেই আইনজীবী প্রশান্ত কিশোরের ওপর হামলার বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। ফলে ভিডিওটির সঙ্গে করা দাবির সত্যতা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ তৈরি হয়।
তারপর ভিডিওর আসল উৎস এবং ভিডিওকেন্দ্রিক বিস্তারিত জানতে ভিডিওটির কী-ফ্রেম গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে খুঁজে দেখি। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট ভিডিওর একটি দীর্ঘ সংস্করণ পাওয়া যায়, যা একটি সংবাদ প্রতিবেদন। এই সংবাদ উপস্থাপনাটি টাইমস নাও ১৩ অক্টোবর ২০১১ তারিখে তাদের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে। ভিডিওটির শিরোনামে লেখা হয়েছে,”প্রশান্ত ভূষণের উপর চমকে দেওয়ার মতো হামলা।“
উপস্থাপনের বিবরণে জানানো হয়েছে,-আইনজীবী ও সমাজকর্মী প্রশান্ত ভূষণকে আজ সুপ্রিম কোর্টের চেম্বারে তিন যুবক মারধর ও লাঞ্ছিত করে, যাদের ডানপন্থী কোনো সংগঠনের সদস্য বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীরে গণভোটের পক্ষে মত দেওয়ার কারণেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
India Today–র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩ অক্টোবর ২০১১-এ সুপ্রিম কোর্ট সংলগ্ন চেম্বারে প্রশান্ত ভূষণকে আক্রমণ হয়েছিল। সহযোগী তাজিন্দর পাল বাগ্গা জানিয়েছিলেন যে তিনি ‘ভগত সিং ক্রান্তি’নামের একটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত এবং সেই সংগঠন হামলার দায় নিয়েছিল। শ্রী রাম সেনা সংগঠনের দিল্লি ইউনিটের সভাপতি ইন্দ্র বর্মাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। শ্রী রাম সেনা সংগঠনের দিল্লি ইউনিটের সভাপতি ইন্দ্র বর্মা, তাজিন্দার সিং বাজ্ঞা ও বিষ্ণু গুপ্তাকে গ্রেফতার করেছিল।
‘দি হিন্দু’র প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল বরিষ্ঠ আইনজীবী ও টিম অন্নার সদস্য প্রশান্ত ভূষণকে বুধবার তাঁর চেম্বারে শ্রী রাম সেনা ও একটি নতুন সংগঠন ভগৎ সিং ক্রান্তি সেনার কর্মীরা মারধর করে। তাঁর চেম্বারটি সুপ্রিম কোর্টের সামনে ভগবান দাস রোডে। ওই দুটি সংগঠন বলেছে, জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে তাঁর বক্তব্যের কারণে তারা এই হামলা করেছে। তিনি বলেছিলেন নিরাপত্তা বাহিনী ফিরে যাক এবং গণভোট করানো হোক।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, সম্প্রতি বিজেপি নেতা প্রশান্ত কিশোরের ওপর হামলার দাবিটি ভুয়ো। হামলার ঘটনাটি ২০১১ সালের অক্টোবর মাসের। জম্মু ও কাশ্মীর বিষয়ক প্রশান্ত ভূষণের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ‘ভগত সিং ক্রান্তি সেন’ এবং ‘শ্রী রাম সেনা’ নামক দুই সংগঠনের তিন সদস্য এই হামলা চালিয়েছিল।
Title:২০১১ সালে প্রশান্ত ভূষণের ওপর হামলার ভিডিওকে সাম্প্রতিক দাবি করে ভুয়ো দাবির সাথে শেয়ার
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False

