
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, গুজরাটের আহমেদনগরে ফিল্মি কায়দায় এটিএম (ATM) ডাকাতদের ধরলেন পুলিশ। ভাইরাল এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি শাটার জাতীয় দরজার বাইরে দাড়িয়ে রয়েছে অনেকগুলি পুলিশ কর্মী। এরপর ধীরে ধীরে দরজা খুলতেই ভেতরে থেকে বেরিয়ে আসে তিনজন এবং পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তিন জনের মুখেই রুমাল বাধা রয়েছে। এরপর পুলিশ তাদেরকে ধরে দর্শকের ভিড়ের মধ্যে দিয়ে বাইরে নিয়ে যায়।
‘বঙ্গ রিপোর্ট’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করা এই পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “আহমেদনগর ফিল্মি কায়েদায় ATM থেকে ডাকাত ধরলো গুজরাটের আহমেদনগর পুলিশ। পুলিশের এমন সাহসিকতাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন…।“ ভিডিওতে ১৭ হাজার ভিউজ রয়েছে এবং ১৯৩ বার শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর পুলিশের একটি মক ড্রিলের ভিডিওকে ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে।
সংবাদ মাধ্যম ‘কলকাতা টিভি’ তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এই ভিডিওর ভিত্তিতে ভুয়ো প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। এই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা রয়েছে, “আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ডাকাত, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংক ডাকাতি রুখল পুলিশ।“ একটি মনগড়া গল্প বানিয়ে সেটিকে খবর বলে করে শেয়ার করা হয়েছে। তাদের দাবি, মহারাষ্ট্রের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ডাকাতি হয়, পুলিশ দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করার পর তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছুই হয়নি।

তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওকে ‘ইনভিড-উই-ভেরিফাই’ টুলে কয়েকটি ফ্রেমে ভাগ করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সংবাদ মাধ্যম ‘মহারাষ্ট্র টাইমস’-এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে এর অনুসন্ধান পাই। চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর আপলোড করা ৫ মিনিটের একটি ভিডিওকে কেটে বিভ্রান্তিকর ভাবে শেয়ার করা হচ্ছে। আসল ঘটনা হল এটি মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর পুলিশ দ্বারা পরিচালিত একটি মক ড্রিলের ভিডিও। এটি শেন্দি গ্রামের ‘গ্রাম সুরক্ষা দল’ দ্বারা আয়োজিত অনুশীলনের ভিডিও। জেলা পুলিশ সুরক্ষার জন্য প্রতিটি গ্রামে দল গঠন করেছে বিভিন্ন রকম পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের সাহায্যের জন্য।
নিচে ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট এবং মহারাষ্ট্র টাইমস-এর ভিডিওর স্ক্রিনশটের একটি তুলনা দেওয়া হল। এতে আরও স্পষ্ট হয়ে যায় দুটি একই ঘটনার ভিডিও।

ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো আহমেদনগর লোকাল ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইন্সপেক্টার অনিল কাটকে-এর সাথে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানান এটি বাস্তব ঘটনা নয়। এটি একটি মক ড্রিল। তিনি বলেন, “এটি শেন্দি গ্রামের একটি ব্যাঙ্কে প্রদর্শিত একটি মক ড্রিলের ভিডিও। ঘটনাটি ৩১ অগস্টের। গ্রামের বিভিন্ন জায়াগায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে এটি পরিচালনা করা হয়।“
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর পুলিশের একটি মক ড্রিলের ভিডিওকে ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:মহারাষ্ট্র পুলিশের মক ড্রিলের ভিডিওকে বাস্তব ঘটনা দাবি করে ভুয়ো পোস্ট করা হচ্ছে
Fact Check By: Nasim AResult: False