বাংলাদেশের ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাস দাবি করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে

Missing Context Political

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নির্বাচন সংক্রান্ত ফেক নিউজের ধারা এখনও অব্যহত। সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভুয়ো ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে তিনি নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাসে আহত হয়েছেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে শাড়ি পরিহিত একজন মহিলা বসে আছে এবং তার মাথা থেকে রক্ত পড়ছে। পোস্টের ক্যাপশনে হিন্দি ভাষায় লেখা রয়েছে, “ইনি কি বাংলার নারী নয়, ইনি কি বাংলার মেয়ে নয়, কেবলমাত্র মমতাই কি বাঙালি এবং বাংলার মেয়ে? যারা নারী হয়েও মমতা কি নির্লজ্জভাবে সমর্থন করে তাদের ধিক্কার জানাই।“ 

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। বাংলারদেশের একটি ঘটনার পুরনো ছবিকে নির্বাচনের সাথে জুড়ে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়ানো হচ্ছে। 

ফেসবুক আর্কাইভ

উল্লেখ্য, ২ মে বাংলার নির্বাচনের ফলাফলের পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের খবর উঠে আসছে। বিভিন্ন ছবি, পোস্ট এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছে। তার মধ্যে কিছু সত্য ঘটনা হলেও বেশিরভাগই ভুয়ো। রাজনৈতিক নেতা এবং সাধারণ কর্মীরা তথ্য যাচাই না করে ভুল ঠিক না যাচাই করে ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে।

তথ্য যাচাই 

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবিটিকে গুগল সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে, ২০২০ সালের একটি টুইটে এর সন্ধান পাই। সেখান থেকে কিছু শব্দ নিয়ে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখতে পাই ২০২০ সালে এই ছবিটি ফেসবুকে বেশ ভাইরাল হয়েছিল। এই পোস্ট অনুযায়ী এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী এলাকার ঘটনা। ওই এলাকার কিছু ভূমিদস্যু একজন সংখ্যালঘু হিন্দু গৃহবধূর পৈতৃক সম্প্রতি হাতানোর চেষ্টা করে। তখন তাদের সাথে সংঘর্ষে আহত হয় অনামিকা দাস নামে ওই গৃহবধূ।  

Facebook

আর্কাইভ

এরপর এই পোস্ট থেকে সূত্র নিয়ে কিছু প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘এইবেলা’র একটি প্রতিবেদনে ভাইরাল হওয়া ছবিটি দেখতে পাই। ২০২০ সালের এই প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, ১ নভেম্বর কয়েকজন ভূমিদস্যু অনামিকাদের বাড়িতে হামলা করে তখন সে আহত হয়। 

প্রতিবেদন আর্কাইভ

‘চট্টগ্রাম প্রতিদিন’ নামের একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) থেকে জানতে পারি, ১ নভেম্বর হাটহাজারীর চিকনদন্ডী ইউনিয়নের অনুকুল মাস্টারের বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে রতন কুমার নাথ, তার পুত্রবধু পুতুল নাথ ও ভাতিজি মুক্তা রানী নাথ আহত হয় এই ঘটনায়। এ হামলার ঘটনায় সদ্য প্রবাস থেকে আসা রুবেল নামে একজনকে দায়ী করছেন রতন কুমার নাথের পরিবারের সদস্যরা। এই প্রতিবেদনে কোথাও অনামিকা দাসের নাম নেই কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া এবং আগের প্রতিবেদনে তাকে অনামিকা দাস বলেই দাবি করা হচ্ছে। 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। বাংলারদেশের একটি ঘটনার পুরনো ছবিকে নির্বাচনের সাথে জুড়ে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়ানো হচ্ছে।

Avatar

Title:বাংলাদেশের ঘটনাকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচন-পরবর্তী সন্ত্রাস দাবি করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে

Fact Check By: Nasim A 

Result: Missing Context


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *