বুলন্দশহরের রাসায়নিক কারখানার বিস্ফোরণের ভিডিও সাম্প্রদায়িক রঙে ভাইরাল

Communal False

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের মুসলিম বাসিন্দা মহম্মদ শফিকের বাড়িতে বিস্ফোরণের ভিডিও। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “খুশির খবর 😂 উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহরে মহম্মদ শফিক নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বড় বিস্ফোরণ, তার বাড়ি থেকে রাসায়নিক ভর্তি ড্রাম উদ্ধার, ৪ জন জান্নাতি ৭২ হুর প্রাপ্তি দর্শন করছে 😁😊 13 জন মৃত্যু সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে 🤗।“ 

তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। বুলন্দশহরে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণের ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে ভাইরাল করা হচ্ছে।   

ফেসবুক পোস্ট 

তথ্য যাচাই

সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে কোন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে কি না জানতে আমরা প্রথমে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলে, আমাদের ফেসবুক পোস্টের ভিডিওর দৃশ্য কেন্দ্রিক একটি সংবাদ প্রতিবেদন পেয়ে যায়। ইন্ডিয়া টিভির ৩১ মার্চ,২০২৩, তারিখের এই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা হয়েছে – বুলন্দশহরে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৪; পলাতক মালিক। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই রাসায়নিক কারখানাটি একজন অনুমোদিত ডিলার রাজকুমারের, যিনি পলাতক। তবে রাজকুমারের ভাই প্রমোদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

এই সুত্র ধরে টুইটারে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করলে আমরা পাই যে, সুদার্শান নিউজের অফিশিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও ফেসবুক পোস্টের এই ভিডিওটি বুলন্দশহরে মসজিদের পাশে থাকা মহম্মদ শফিকের বাড়িতে বিস্ফোরণ দাবিতে শেয়ার করা হয়েছে এবং এই ভিডিওর প্রতি উত্তরে বুলন্দশহর পুলিশ জানিয়েছেন যে-দয়া করে সত্য না জেনে বিভ্রান্তিকর খবর ছড়াবেন না।

এখান থেকে ধারণা হয়ে যায় বিস্ফোরণের এই ভিডিওটি বুলন্দশহরের ঠিকই কিন্তু ভিডিওর সাথে দেওয়া তথ্য ’মোহাম্মদ শফিকের বাড়িতে বিস্ফোরণ’ দাবিটি বিভ্রান্তিকর। 

তারপর ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডোর একজন সাংবাদিক প্রতিনিধি বুলন্দশহর পুলিশের এসএসপি শালোক কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানিয়েছেন, “অবৈধভাবে পরিচালিত রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণটি ঘটেছে। এই কারখানাটি চালাতেন রাজকুমার নামে এক ব্যক্তি। তিনি সেখানে রংয়ের কারখানা চালাতেন। এ ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুইজন মুসলমান এবং বাকি চার জন হিন্দু সম্প্রদায়ের। রাজকুমার সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।“ পাশাপাশি ভাইরাল হওয়া পোস্টের বিষয়ে তিনি স্পষ্ট করে জানান, “এই ঘটনা কোন সন্ত্রাসী বা কোন মুসলিম সম্প্রদায়ের অ্যাঙ্গেল নেই। এই ঘটনায় মহম্মদ শফিক নামে কোনো ব্যক্তি যুক্ত নেই। এই বিস্ফোরণ কারও বাড়িতে নয়, অবৈধ কারখানায় হয়েছে। ভাইরাল হওয়া খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।“একইসঙ্গে তিনি আরও জানিয়েছেন যে, বিস্ফোরণের স্থানটির কাছাকাছি কোনো মসজিদ নেই। তিনি আমাদের সাথে এই মামলার এফআইআর কপিও শেয়ার করেছেন। দেখুন এখানে।  

এই বিস্ফোরণ সংক্রান্ত বুলন্দশহর পুলিশের ভিডিও বার্তা গুলো দেখুন এখানে, এখানে, এখানে 

তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে প্রমানিত হয় যে, বুলন্দশহরের বাসিন্দা মোহাম্মদ শফিকের বাড়িতে রাসায়নিক বিস্ফোরণের ভিডিও দাবিটি মিথ্যা। 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিস্যান্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। বুলন্দশহরে অবৈধভাবে পরিচালিত একটি রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণের ভিডিওকে সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে ভাইরাল করা হচ্ছে। 

Avatar

Title:বুলন্দশহরের রাসায়নিক কারখানার বিস্ফোরণের ভিডিও সাম্প্রদায়িক রঙে ভাইরাল

Fact Check By: Nasim Akhtar 

Result: False


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *