
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, লেখিকা তসলিমা নাসরিন মারা গিয়েছেন। ভাইরাল এই পোস্টে লেখিকার ছবি দেওয়া রয়েছে এবং ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, #ব্রেকিং_নিউজ তসলিমা নাসরিন মারা গেছেন! সূত্র: ফেইসবুক। সংবাদ প্রতিদিন নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে এই পোস্ট শেয়ার করা হয়েছে।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মৃত্যু হওয়ার খবরটি ভুয়ো।

তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে গুগলে লেখিকার নাম দিয়ে কিওয়ার্ড সার্চ করি। একাধিক মুখ্যধারার সংবাদমাধ্যমে তসলিমা নাসরিনের মৃত্যুর ভুয়ো খবর নিয়ে লেখা প্রতিবেদন দেখতে পাই। আনন্দবাজারের ১৯ জানুয়ারি তারিখের একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মৃত্যুর খবরটি আসলে ভুয়ো। এই প্রতিবেদনের শিরোনামে লেখা রয়েছে – Taslima Nasrin: মৃত্যু বিষয়ক লেখা লিখতেই নেটমাধ্যমে ‘মৃত’ তসলিমা নাসরিন!
আসল ঘটনা হল, থিয়েটার অভিনেত্রী শাঁওলি মিত্রর মৃত্যুর পর লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার ফেসবুজ পেজ থেকে একটি কবিতা শেয়ার করেন। কবিতার প্রথম দুই লাইনে লেখা রয়েছে – আমি চাই আমার মৃত্যুর খবর প্রচার হোক চারদিকে। প্রচার হোক যে, আমি আমার মরণোত্তর দেহ দান করেছি হাসপাতালে, বিজ্ঞান গবেষণার কাজে।
এই ‘আমার মৃত্যু’ শব্দ দেখেই ফেসবুক অ্যাপ লেখিকার পেজে ‘Remembering’ ট্যাগ লাগিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, এটি ফেসবুকের একটি ফিচার। যখন কোনও ইউজারের মৃত্যু হয় তখন তার অ্যাকাউন্টে ‘রিমেম্বারিং’ শব্দটি যুক্ত করে দেওয়া। এই ক্ষেত্রেও ভুলবসত ফেসবুক তসলিমা নাসরিনকে মৃত ভেবে বসেন এবং এরপরেই তার মৃত্যুর খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় রটে যায়।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক পেজে ওই কবিতাটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই কবিতার পরই ফেসবুক লেখিকা মৃত মনে করে।
লেখিকা আরও একটি কৌতুকমূলক পোস্ট করে জানিয়ে দেন তিনি বেঁচে আছেন এবং তার অ্যাকাউন্ট থেকে ‘রিমেম্বারিং’ লেখা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, তিনি একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন শেয়ার করে জানিয়ে দেন তার মৃত্যুর খবরটি ভুয়ো।
সমস্ত প্রমাণ এবং তথ্য থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মৃত্যুর খবরটি একেবারেই ভুয়ো।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। লেখিকা তসলিমা নাসরিনের মৃত্যু হওয়ার খবরটি ভুয়ো।