
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভুয়ো পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, চার জন মুসলিম যুবকের ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে চার জন ছেলের হাতে দড়ি বাধা রয়েছে। চার জনের গায়েই জামা নেই। আশেপাশে অনেকগুলি লোক ভিড় করে দাড়িয়ে রয়েছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “এই হলো ভারতীয় মুসলমান ভাইদের অবস্থা, আল্লাহ আপনি তাদের হেফাজত করুন আমিন।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। ২০১৬ সালের গুজরাটে গো-অত্যাচারের অভিযোগে চার জন দলিত যুবককে মারধোর করার ঘটনাকে ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে।

তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। সংবাদ মাধ্যম ‘স্ক্রল’-এর ২০১৮ সালের একটি প্রতিবেদনে এই ছবিটি দেখতে পাই। দলিত সম্প্রদায়কে নিয়ে লেখা একটি বিশেষ প্রতিবেদনে এই ছবিকে ব্যবহার করা হয়েছে যার ক্যাপশনে লেখা রয়েছে “২০১৬ সালের উনাতে দলিত অত্যাচারের দৃশ্য”।

সংবাদ মাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টাইমস’-এর ২০১৬ সালের ১৩ জুলাই-এর একটি প্রতিবেদনে এই ঘটনা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পারি। গুজরাটের গির সোমনাথ জেলার উনা শহরে গো-হত্যার অভিযোগে চারজন যুবককে স্থানীয় গো রক্ষক সমিতির কয়েকজন লোক মারধোর করে। ব্যবসার কাজে ওই চারজন একটি মৃত গরুর চামড়া ছাড়িয়ে সেটিকে অন্য যায়গায় নিয়ে যাচ্ছিল। সেসময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে জামা কাপড় ছিঁড়ে বেধরক মারধোর করে। পুলিশ গো রক্ষক সমিতির রমেশ ভাগবান, রাকেশ জোশি এবং রামজিভাই বানিয়াকে গ্রেফতার করে।

সংবাদ মাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’ এবং ‘দ্যা ওয়াইর’ এর প্রতিবেদন থেকেও একই খবর জানতে পারি।
‘ইন্ডিয়া টাইমস’-এর ফেসবুক পেজে এই ঘটনার একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায় যেখানে দেখা যায় এই চার জনকে দু-তিন জন মিলে লাঠি বাঁশ দিয়ে আঘাত করছে। সমস্ত যুক্তি এবং প্রমাণ থেকে স্পষ্ট বলা যেতে পারে এই ঘটনার সাথে মুসলিম অত্যাচারের কোনও সম্পর্ক নেই।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। ২০১৬ সালের গুজরাটে গো-অত্যাচারের অভিযোগে চার জন দলিত যুবককে মারধোর করার ঘটনাকে ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:পুরনো একটি ছবিকে মুসলিম অত্যাচারের ঘটনা দাবি করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Nasim AResult: Partly False