
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ ইউক্রেনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরের নতুন ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি রুশ ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধের দৃশ্য। ১১ মিনিট ৫১ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে অস্ত্রধারী অনেকগুলি সৈন্য কয়েকটি যুদ্ধ বিমানের দিকে আগ্নেয়াস্ত্র ছুঁড়ছে। পাল্টা যুদ্ধ বিমান থেকে সৈন্যদের দিকে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। ভিডিওর শেষের অংশে সৈন্যের দল মাটি থেকে বোমা উদ্ধার করছে।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ।”
তথ্য যাচাই করে আমরা জানতে পারি পোস্টের দাবি ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর। পুরনো অপ্রাসঙ্গিক ভিডিওকে রুশ-ইউক্রেন বিবাদের সাথে জুড়ে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।
উল্লেক্ষ্য, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্যে ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দেন। প্রথমে ইউক্রেনের শহরের বিমানবন্দর ও সামরিক সদর দফতগুলিতে আক্রমণ করা হয়। বিস্তারিত পড়ুন।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচায় করতে আমরা ভিডিওটিকে ভালো ভাবে পর্যবেক্ষণ করি। ভিডিও দেখে বুঝতে পারি কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ভিডিওকে জুড়ে এই দীর্ঘ ভিডিওটি বানানো হয়েছে।
এরপর এটিকে ইনভিড-উই-ভেরিফাই টুলের মাধ্যমে কি ফ্রেমে ভেঙ্গে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে ’SİLAH VE SAVAŞ TEKNOLOJİLERİ’ নামের এক ফেসবুক প্রোফাইলে ২০১২ সালে ৩০ জানুয়ারী তারিখে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে এর অনুসন্ধান পাওয়া যায়। ভাইরাল ভিডিওর সাথে এই ভিডিওর কিছু দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। পোস্টের ক্যাপশন অনুযায়ী, আফগানিস্তানের জঙ্গি সংগঠন তালিবান একটি মেরিন ইউনিটে আক্রমণ করছে। এই ভিডিওতে ভাইরাল ভিডিওর প্রথম অংশের প্রমাণ পাওয়া যায়।

ভাইরাল ভিডিওটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে ভিডিওর ৭ মিনিট ১৩ সেকেন্ডে স্ক্রিনে একটি লেখা ভেসে উঠে। এই লেখা অনুযায়ী, আফগান ন্যাশনাল আর্মির বি-রল, আই এস টি ব্রিগেড, আফগানিস্থানের কান্দাহার প্রদেশের পাঞ্জ্বার জেলার পান কালে গ্রামে মাদক দ্রব্য ও প্রিসোম প্লেট বোম উদ্ধার করছে।
এই সুত্র ধরে ইউটিউবে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে “319MPAD” নামের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্টের ভিডিওর বাকি অংশে খুঁজে পাই। ভাইরাল ভিডিওকে তিনটি ভাগে ২০১২ সালের জানুয়ারী মাসে এই চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে। ভিডিওর বিবরণ অনুযায়ী, আফগানিস্তানের কান্দাহার এলাকার পাঞ্জ্বায়ি জেলার পান কালায় গ্রামে আফগান আর্মি উন্নত বিস্ফোরক ডিভাইস উদ্ধার করেছে।
ভাইরাল ভিডিওটি ঠিক কোথাকার তা সঠিকভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি তবে ২০১২ থেকেই এটি ইন্টারনেটে রয়েছে। অতএব, উপরোক্ত প্রমাণ ও তথ্যের সাথে স্পষ্ট হয়ে যায় এই ভিডিওর সাথের রুশ ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কোনও সম্পর্ক নেই।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। পুরনো অপ্রাসঙ্গিক ভিডিওকে রুশ-ইউক্রেন বিবাদের সাথে জুড়ে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:অপ্রাসঙ্গিক পুরনো ভিডিওকে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের দৃশ্য দাবি করে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Nasim AResult: False