বাংলাদেশের এক হিন্দু শিক্ষককে জুতোর মালা পরালো মুসলমানরা? ভিডিওটির সত্যতা জানুন 

Communal False

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে যেখানে দেখা যাচ্ছে ফেজ টুপি ও পাঞ্জাবি পরিহিত কয়েকজন ব্যক্তি একজনকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এবং মাঝখানে থাকা ব্যক্তির গলায় জুতোর মালা পরানো হয়েছে এবং সেই মুহূর্তে অনেকে তার ভিডিও করছে। ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”উনি বাংলাদেশের একটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক.. এই স্কুলে উনিই একমাত্র সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষক ছিলেন.. অনেক বছর শিক্ষকতা করার পড় উনাকে আজ চরম অপমানিত করে জোরপূর্বক শিক্ষকতার চাকরি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলো.. কারণ একটাই উনি হিন্দু।“ 

তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি ভুয়ো। সেই ব্যক্তি হিন্দু নন, একজন মুসলিম। তার নাম আহম্মদ আলী, পেশায় একজন চিকিৎসক। নবী হজরত মুহাম্মদ (সঃ) সম্পর্কে কটূক্তির করায় স্থানীয়রা তাকে জুতোর মালা পরিয়েছিলেন। 

ফেসবুক পোস্ট, ফেসবুক পোস্ট,  

তথ্য যাচাইঃ 

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলস্বরুপ, এই ভিডিওর দীর্ঘ সংস্করণ ‘Rupayit Rupayon’ ও লেখিকা ‘তসলিমা নাসরিন’-এর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা মিলে। পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে,”আজ রাজবা‌ড়ি জেলার ব‌লিয়াকা‌ন্দি উপজেলায় ডাঃ আহম্মদ আলিকে ধর্ম অবমাননার অ‌ভি‌যোগ তুলে হেনস্থা করেছে তৌহিদি জনতা.।“ 

ভিডিওগ্রহন কারীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, জুতোর মালা পরিহিত সেই ব্যক্তির নাম ডঃ আহম্মদ আলী। নবী সম্পর্কে কটূক্তি করায় তার সাথে এই ব্যবহার করা হচ্ছে। 

https://www.facebook.com/reel/1267337395092408 

বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম ঢাকা টাইমস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই ব্যক্তির নাম আহম্মদ আলী। তিনি বাংলাদেশের নবাবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ১৫ জুন, রবিবার সকাল ১০টার দিকে নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মহানবী (সঃ) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন ডাঃ আহম্মদ আলী। খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে গণপিটুনি দেয় ও জুতার মালা পরিয়ে বাজারে ঘুরিয়েছিলেন। পরবর্তীতে বালিয়াকান্দি থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত ক‌রে ওই ব্যক্তিকেও উদ্ধার করে। নবাবপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। 

scrnli_JhrKmahSAPT1FN.png

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

অন্যান্য সংবাদ প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য জানা যায়। জা থেকে স্পষ্ট হয় যে সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পোস্টের দাবিটি ভুয়ো। 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, জুতোর মালা পরানো ব্যক্তি হিন্দু নন, বরং একজন মুসলিম। তার নাম ডাঃ আহম্মদ আলী। তিনি মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করায় স্থানীয়দের রোষের শিকার হন। তাই তাকে জুতোর মালা পরানো হয়। ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে নয়, কটূক্তির জেরে এই ঘটনা ঘটে।

Avatar

Title:বাংলাদেশের এক হিন্দু শিক্ষককে জুতোর মালা পরালো মুসলমানরা? ভিডিওটির সত্যতা জানুন

Fact Check By: Nasim Akhtar 

Result: False

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *