
গত ২ মে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হয়েছে। তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রাজনৈতিক দলগুলির দ্বন্দ্বের খবর শোনা যাচ্ছে। কোথাও অভিযোগ উঠেছে একদল লোকেরা অন্য দলের সমর্থকদের খুন করেছে আবার কোথাও দলীয় কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা দেখা গেছে। এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জাতীয় স্তরে। সন্ত্রাসের বিভিন্ন রকম ছবি, পোস্ট এবং ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যার মধ্যে কিছু ঠিক কিন্তু ভুয়ো দাবির সংখ্যাও রয়েছে উল্লেখযোগ্য।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কর্মকর্তা উত্তম ঘোষকে খুন করছে তৃণমূল। খুবই অস্বস্তিকর এই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “তৃণমূলের সমর্থকরা আমার স্বামীকে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে গিয়ে তাকে জয় শ্রী রাম বলতে বলে। এরপর তাকে বলে তোমার বিজেপি সমর্থকরা কোথায় এবং সঙ্গে সঙ্গে রানাঘাটের গঙ্গাপুরে তাকে খুন করে…- উত্তম ঘোষের স্ত্রী (দৈনিক ভাস্কর খবরের কাগজ থেকে নেওয়া উক্তি)। ঔরঙ্গজেবের সময় তবে কি হয়েছিল?”
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন। ব্রাজিলের একটি ভিডিওকে নির্বাচন-পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গের সন্ত্রাসের ঘটনা দাবি করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।
তথ্য যাচাই
প্রথমে আমরা ভিডিওটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাই যে ভাষায় কথা বলে হচ্ছে সেটি একটি বিদেশী ভাষা। এতে আমাদের সন্দেহ হয় এটি পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা নয়। আমরা ভিডিওটিকে কয়েকটি ফ্রেমে ভেঙে গুগল সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলাফলে, ৩৬০ নামে একটি ব্রাজিলিয়ান ওয়েবসাইটে ২০১৮ সালের ৬ জানুয়ারির একটি প্রতিবেদনে এই ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট দেখতে পাই। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি ব্রাজিলের ঘটনা এবং যাকে মারা হচ্ছে সে হল ১৭ বছর বয়সী ওয়েসলি টিয়াগো ডি সাসা কারভালহো। ব্রাজিলের ফোর্টালেজার প্রিয়া ডু ফুটোরো নামে একটি যায়গায় একদল লোক তাকে নির্মম ভাবে খুন করে। এই ঘটনার তদন্তকারীরা জানান গ্যাং জাতীয় দলের মধ্যে বচসার কারনে কারভালহোকে হত্যা করা হয়।

এরপর প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে এই একই খবর মনোলিটো পোস্ট নামে একটি ওয়েবসাইটে দেখতে পাই। ২০১৮ সালের এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, নির্যাতিতর নামে ওয়েসলি টিয়াগো ডি সাসা কারভালহো। এই ঘটনায় জড়িত সবকটি অভিযুক্তকে খুঁজে বের করে পুলিশ এবং দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের তদন্ত অনুযায়ী ছেলেটিকে কুড়াল এবং পাথর দিয়ে মারা হয়।
দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং জাতীয় দলের মধ্যে বচসার কারনেই টিয়াগোকে মারা হয়। এই ঘটনায় যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের নাম হল হোজে কার্লোস ইভাঞ্জেলিস্টা ডস অঞ্জস এবং লুসিওানো আলভেস ডিসুজা। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী এটি ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারির ঘটনা।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত পোস্টটি ভুল। ব্রাজিলের একটি ভিডিওকে নির্বাচন-পরবর্তী পশ্চিমবঙ্গের সন্ত্রাসের ঘটনা দাবি করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:ব্রাজিলের পুরনো ভিডিওকে পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা দাবি করে ভুয়ো পোস্ট শেয়ার করা হচ্ছে
Fact Check By: Nasim AResult: False