
পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা দাবি করে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পুরনো ভুয়ো ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে অনেকগুলি লোক মিছিল করে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন এবং ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ডে গান জাতীয় সুরে বলা হচ্ছে, “নাস্তিকতা নিপাত যাক। ইসলাম জিন্দাবাদ।“ দাবি করা হচ্ছে এটি মমতা ব্যানার্জির আমলের বাংলার দৃশ্য।
একইরকম ক্যাপশনের সাথে এটিকে অনেকেই শেয়ার করেছেন। বলা হচ্ছে,
“রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম আছে! ইসলামী থাকবে ইনশাআল্লাহ। নাস্তিকদের মনের আশা কোনদিন পূরণ হবে না ❌ “রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম ভালো না লাগলে! বাংলা ছেড়ে চলে যাও। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ছিল, আছে, থাকবে _______ইনশাআল্লাহ____”।

এই পোস্ট গুলিতে স্পষ্ট করে বলা নেই যে এগুলি পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা। বিভ্রান্তিকর হলেও বলা হয়েছে, “বাংলা ছেড়ে চলে যাও”। এক্ষেত্রে দাবি করা যেতেই পারে যে এখানে বাংলাদেশের কথা বলা হয়েছে। সমস্যার শুরু হয় যখন কানাডাবাসি পাকিস্তানি সাংবাদিক তারেক ফাতাহ টুইটারে এই ভিডিওটি শেয়ার করে বলেন, “এটা কারাচি, কাশ্মীর বা কেরালা নয়। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী মমতা ব্যানার্জির কলকাতায় ইসলাম জিন্দাবাদ স্লোগান তোলা হচ্ছে।“
তারেক ফাতাহকে টুইটারে খুজতে গিয়ে দেখতে পাই তার অ্যাকাউন্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। যদিও আর্কাইভ থেকে এই টুইটটি আমরা পেয়ে যাই।
তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো দেখতে পেয়েছে এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর।

তথ্য যাচাই
ভিডিওটিকে কয়েকটি ফ্রেমে ভেঙে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখতে পাই, ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ‘স্পাইস ইনফোটিউব’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে এই ভিডিওটি শেয়ার করে হয়েছে। শিরোনামে ইংরেজি ভাষায় লেখা রয়েছে, “মিয়ানমার দূতাবাসকে ঘিরে ফেলার বাংলদেশ আন্দোলন”।
আরও দেখতে পাই, রাপ্টলি নামে একটি আন্তর্জাতিক ডিজিটাল গণমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেল থেকে এই বিক্ষোভ মিছিলের অন্য একটি ভিডিও একটি দিনে (১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭) একইরকম শিরোনামের সাথে শেয়ার করা হয়েছে।
গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে ‘বাংলা ট্রিবিউন’ নামে বাংলাদেশের একটি গণমাধ্যমের ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বরের একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) থেকে জানতে পারি, “মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের দাবিতে পূর্ব ষোষিত মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাও করতে জড়ো হন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। বুধবার সকাল ১০টা থেকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জড়ো হতে থাকেন তারা।“
অন্যদিকে, টুইটারে কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখতা পাই ‘কলকাতা পুলিশ’ তারেক ফাতাহর এই দাবিকে ভুয়ো বলে টুইট করে জানিয়েছে, “বাংলাদেশের একটি ভিডিওকে কলকাতা ভিডিও বলে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে। আইনি পদক্ষেপের কাজ শুরু করা হয়েছে।“
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের বাংলাদেশের আন্দোলনের ভিডিওকে কলকাতার বলে ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে।

Title: ২০১৭ সালের বাংলাদেশের ভিডিওকে কলকাতার বল ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে
Fact Check By: Rahul AResult: False