
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভুয়ো ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতের সংবিধানে আরএসএস-কে দেশের শত্রু বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। ছবিতে একটি লেখার স্ক্রিনশট দেওয়া রয়েচে। এই লেখার একটি অংশে বলা হয়েছে,
“Page No – 156 RSS হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় শত্রু। আর এই সংগঠনটি স্বাধীনতার আন্দোলনে ভারতের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে ছিল। এই সংগঠনের নেতা মহাত্মা গান্ধীকে হত্যা করেছিল। এই সংগঠনকে ব্যান করা হলো। 1956 সালে যখন RSS এর উপর থেকে ব্যান তোলা হলো তখন কিছু শর্ত রাখা হলো- RSS কোনোদিন রাজনিতীতে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। সংবিধানের অংশ কোনোদিন হতে পারবে না। দেশভক্ত পার্টি হিসাবে কোনোদিন বিবেচনা করা হবে না। শুধুমাত্র একটি সংগঠন হিসাবেই চলবে।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছিএ ই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। ভারতের সংবিধানে কোথাও আরএসএস-কে দেশের শত্রু বলা হয়নি।


তথ্য যাচাই
পোস্টে দাবি করা হয়েছে যে সংবিধানের ১৫৬ নম্বর পাতায় আরএসএস-কে দেশের শত্রু দাবি করা হয়েছে। এই দাবির সত্যতা যাচাই করার জন্যই প্রথমে আমরা সরকারি ওয়েবসাইট থেকে সংবিধানের ১৫৬ নম্বর পাতা খুঁজে বের করি। এই পাতায় ২৫৫ নং ধারা রয়েছে যেখানে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে সম্পর্কের আইন লেখা রয়েছে। এই পাতায় কোথাও আরএসএস –এর বিষয়ে কোনও কথা উল্লেখ করা হয়নি।

এরপর কিওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদমাধ্যম ‘দ্যা ওয়্যার’-এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি ১৯৪৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই পাটেল আরএসএস-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। একটি সরকারি বিবৃতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেশে ঘৃণা ও সহিংসতার যে শক্তি কাজ করছে তাকে নির্মূল করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এই ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৪৮ সালের। তার ঠিক দু’বছর পর অর্থাৎ ১৯৫০ সালের ভারতের সংবিধান সরকারি ভাবে গৃহীত হয়েছিল। তবে সংবিধানের কোথাও আরএসএস-এর বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। ভারতের সংবিধানে কোথাও আরএসএস-কে দেশের শত্রু বলা হয়নি।