
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, প্যালেস্তাইনকে সাহায্য করতে সৈন্য পাঠাচ্ছে তুরস্ক ও পাকিস্তান। ছবিতে দেখা যাচ্ছে একদল অস্ত্রধারী সৈন্য কয়েকটি গাড়ি সহ রাস্তার ওপর দাড়িয়ে রয়েছে। গাড়ির ওপরে তুরস্কের পতাকা লাগানো রয়েছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “আলহামদুলিল্লাহ🤲 প্যালেস্তাইন এর পথে তুর্কি ও পাকিস্তান সৈন্য✊ আগামীকাল বিমান বাহিনী প্রেরণ করার কথা সৌদি আরবের। আল্লাহ তুমি এই বীর সেনাদের কবুল করো। মুসলমান দের রক্ষা করো।_ সূত্র;-আলজাজিরা”।
তথ্য যাচাই করে দেখতে পেয়েছি এই দাবি বিভ্রান্তিকর এবং ভিত্তিহীন। পুরনো একটি ছবিকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফের ইজরায়েল ও ফিলিস্তিনের বহু প্রাচীন সংঘর্ষের আগুন জ্বলে উঠেছে। এবার ঘটনাস্থল জেরুজালেমের আল-একসা মসজিদ। ইতিমধ্যেই সংঘর্ষ রীতিমতো বড় আকার ধারণ করেছে দুপক্ষের মধ্যে। একে অপরের দিকে নিশানা করে চলে রকেট নিক্ষেপ। সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৯২ জন প্রান হারিয়েছে যার মধ্যে ৫৫ জন শিশু এবং ৩৩ জন মহিলা। অন্যদিকে, হামাসের রকেট হামলায় দুজন ইজরায়েলি প্রান হারিয়েছে যার মধ্যে একজন ভারতীয় বলে জানা গিয়েছে। সংযুক্ত রাষ্ট্র সুরক্ষা পরিষদের সদস্য় এবং মুসলিম দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের বৈঠক হয়েছে। ইজরাযেল ও হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীর মধ্য়ে এক সপ্তাহ ধরে যুদ্ধ চলছে। বহু সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তা ছাড়া দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ দ্রুত রোখা না গেলে বহু সাধারণ মানুষ প্রাণ হারাবেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। আর এবার মুসলিম দেশের বিদেশ মন্ত্রীরা এই ব্য়াপারে আমেরিকার হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে, বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটে এই ছবিটিকে দেখতে পাই। ‘ইডিএম’ নামে একটি ওয়েবসাইটের ২০১৯ সালের একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী এটি উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’-এর ছবি।
তুরস্কে বসবাসকারী উত্তর সিরিয়ার রিফিউজিদের তাদের জমি ফিরিয়ে দিতে ২০১৯ সালে ৯ অক্টোবর তুরস্ক সরকার ‘অপারেশন পিস স্প্রিং’ নামে একটি অভিযান চালায়। এই অভিযানের মূল লক্ষ ছিল উত্তর সিরিয়ার শহরগুলি থেকে জঙ্গিদের উৎখাত করা।

এছাড়া আরও দেখতে একটি তুর্কি ওয়েবসাইটে ২০১৯ সালে এই ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে যার শিরোনামে লেখা রয়েছে “অপারেশন পিস স্প্রিং শুরু হল”। আরও বিভিন্ন তুর্কি ভাষার ওয়েবসাইটে এই ছবিটিকে খুঁজে পাওয়া যায় এবং সেখানেও একই দাবি করা হয়। এটি ঠিক কোথাকার ছবি তা আমরা কোনও বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে খুঁজে পাইনি তবে এর সাথে যে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন যুদ্ধের কোনও সম্পর্ক নেই তা একেবারেই স্পষ্ট।

এছাড়া প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখতে পাই তুর্কি এবং পাকিস্তান ফিলিস্তিনের সাহায্যের জন্য কোনও সৈন্য পাঠায়নি। এই ঘটনার তাড়াতাড়ি সুরাহা করারা উদ্দেশ্য হাত মেলায় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। পুরনো একটি ছবিকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে।

Title:পুরনো একটি ছবিকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষের সাথে যুক্ত করে ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে
Fact Check By: Rahul AResult: False