SDPO স্ত্রী স্বামীকে IPS অফিসার বানিয়ে দিলেন? জানুন সত্যতা

Missing Context Social

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বেকার ছেলেকে বিয়ে করে স্বামীকে আইপিএস অফিসার বানিয়ে দিলেন ডিএসপি ম্যাডাম। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ‘আজ দিনকাল’ নামের নিউজ পোর্টালের একটি পোস্টের স্ক্রিনশট রয়েছে। থাম্বনেলে পুলিশের ড্রেস পরিহিত একজন মহিলা ও একজন লোককে দেখা যাচ্ছে। 

পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে “I salute him । প্রতিটা মেয়ের এই রকম মনোবৃত্তি হওয়া প্রয়োজন।”

তথ্য যাচাই করে আমরা জানতে পারি পোস্টের মাধ্যমে করা দাবি ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। ভাগলপুর জেলার কাহালগাওর ‘এসডিপিও’ রেশু কৃষ্ণার তার স্বামীকে পুলিশের ড্রেস পরিয়ে ছবি তোলার ঘটনাকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে। 

ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ 

প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই দেখা যায় বিভ্রান্তিকর শিরোনামের সাথে প্রতিবেদন শেয়ার করার ফলে অনেকেই ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর খবরর ফাঁদে পড়েন। এক্ষেত্রেও, একই ঘটনা ঘটেছে, শিরোনাম পড়ে মনে হয় বেকার ছেলেকে বিয়ে বিয়ে তাকে প্রতিষ্ঠিত করে আইপিএস অফিসার বানানো হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই পাঠক তাই ভেবে প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট পোস্ট করেছে। কিন্তু প্রতিবেদন পড়ে দেখা যায় আসল ঘটনা একেবারেই আলাদা। 

তথ্য যাচাই 

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে স্ক্রিনশটে থাকা সংবাদ মাধ্যমের ফেসবুক পেজ থেকে স্ক্রিনশটের প্রতিবেদন খুঁজে বের করি। এই খবরের প্রতিবেদনের লিঙ্ক (আর্কাইভ) পড়ে জানতে  জানতে পারি আসল ঘটনা হল, থাম্বনেলে যেই মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তিনি হলেন বিহারের ভাগলপুর জেলার ‘সাব-ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার (এসডিপিও) রেশু কৃষ্ণা এবং পাশে থাকা লোকটি হলেন তার স্বামী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে রেশু কৃষ্ণা একজিন ‘ডেপুটি সুপারইন্টেডেন্ট অফ পুলিশ (ডিএসপি)। তিনি তার স্বামীকে পুলিশের ইউনিফর্ম পরিয়ে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট করেন এবং সেখান থেকেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। 

দিন আজকাল ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ 

এরপর এই সুত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলাফলে মুখ্যধারার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এই ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। ‘ইন্ডিয়া টিভি’-এর ৩ অগস্টের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রেশু কৃষ্ণা পাটনার বাসিন্দা। ‘বিহার পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (বিপিএসসি) বোর্ডে ১৩ র‍্যাঙ্ক করে ভোজপুর জেলায় পোস্টিং হয় তার। পরবর্তীতে ‘এসডিপিও’ হিসেবে তালে ভাগলপুর জেলার কাহালগাওতে পোস্টিং হয়। তিনি তার স্বামীকে আইপিএস-এর ইউনিফর্ম পরিয়ে একটি পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। কেউ একজন এই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসে (পিএমও) একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশে দেওয়া হয়। এখানে বলে রাখা ভালো, ভারতীয় আইন অনুযায়ী, সাধারণ মানুষের পুলিশ বা আইপিএস-এর ইউনিফর্ম পরা দণ্ডনীয় অপরাধ।  

ইন্ডিয়া টিভি প্রতিবেদনআর্কাইভ 

সংবাদ মাধ্যম ‘জি নিউজ’র ৪ অগস্টের প্রতিবেদন থেকেও একই কথা জানতে পারি। এই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর রেশু কৃষ্ণা তিনি সমস্ত অ্যাকাউন্ট ব্লক করেন।  

জি নিউজ প্রতিবেদন আর্কাইভ 

এরপর সংবাদ মাধ্যম ‘ফার্স্ট বিহার ঝাড়খণ্ড’-এর ইউটিউব চ্যানেলে এই ঘটনার প্রতিবেদন দেখতে পাই। জানা যায়, তারা ভাগলপুর সিটির এসএসপি-এর সাথে যোগাযোগ করে। তাদের জানানো হয়, কাহালগাও থানার কাছ থেকে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘটনার মুখ্য চরিত্র রেশু কৃষ্ণাকে যোগাযোগ করার পর তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। ভাগলপুর জেলার কাহালগাওর ‘এসডিপিও’ রেশু কৃষ্ণার তার স্বামীকে পুলিশের ড্রেস পরিয়ে ছবি তোলার ঘটনাকে বিভ্রান্তিকর দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে।

Avatar

Title:SDPO স্ত্রী স্বামীকে IPS অফিসার বানিয়ে দিলেন? জানুন সত্যতা

Fact Check By: Nasim A 

Result: Missing Context


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *