২০২০ সালে বাংলাদেশে ভুমিদস্যুর হামলায় আক্রান্ত মহিলার ছবিকে ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল

False International

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, বাংলাদেশের নোয়াখালীতে একজন অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে গণধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে। পোস্টের ছবিতে দেখা যাচ্ছে লাল শাড়ি পরিহিত একজন মহিলা বিছানায় শুয়ে আছেন। ছবির ওপরেই লেখা রয়েছে, “বাংলাদেশের নোয়াখালীতে গতকাল ২২-১০-২০২১ রাতে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে একাধিক মৌলবাদীরা লাইন দিয়ে একের পর এক গণধর্ষণ করে হত্যা করে। গৃহবধূর মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরেও মৌলবাদীরা ধর্ষণ করে, আপনার মা বোন হলে কি আপনি চুপ থাকতে পারতেন?”

তথ্য যাচাই করে আমরা জানতে পারি পোস্টের মাধ্যমে করা দাবি বিভ্রান্তিকর। ২০২০ সালে বাংলাদেশের মোংলা উপজেলায় ভুমিদস্যুর হামলায় আক্রান্ত মহিলার ছবিকে ধর্ষণের ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল করে ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে।   

ফেসবুক পোস্ট আর্কাইভ 

প্রসঙ্গত, কুমিল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজার মন্ডপে মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ কোরান পাওয়া ঘিরে দেশজুড়ে একধরণের অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পুজোমন্ডপ, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং আগুনের পর দেশের ২২ জেলায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। কুমিল্লার ঘটনায় এপর্যন্ত ৪৩ জনকে আটক করা হয়েছে। 

গত ১৭ অক্টোবর রংপুর জেলার এক হিন্দু যুবকের ধর্ম বিদ্বেষী ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে নতুন করে এক বচসা বেঁধে ওঠে। এই বচসার জেরে ২০টি হিন্দু বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।  

তথ্য যাচাই

এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ছবিটিকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম ‘বাংলাদেশ দর্পণ’-এর ২০২০ সালের ২৫ এপ্রিল তারিখের প্রতিবেদনে এর অনুসন্ধান পাই। প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি মহিলার নাম সুমিতা বালা। মোংলা উপজেলার হিন্দু পরিবারের বসত জমি কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছিল এলাকার প্রভাবশালী লোক আঃ ছালাম। ২৪ এপ্রিল ওই পরিবার বস্তিভিটের সীমানা ঘিরতে গেলে আঃ ছালামসহ সন্ত্রাসীরা অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। সেসময় সুমিতা অন্তঃসত্তা ছিলেন। এই হামলায় তিনি গুরুতর ভাবে আহত হন। 

বাংলাদেশ দর্পণ প্রতিবেদন আর্কাইভ 

এই সুত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে সংবাদ মাধ্যম বেগারহাট২৪-এর ২৪ তারিখের একটি প্রতিবেদন থেকেও একই কথা জানতে পারি।  

প্রতিবেদন আর্কাইভ 

এরপর ‘ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো বাংলাদেশ’ নোয়াখালী জেলার এস পি শহিদুল ইসলাম-এর সাথে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানান, “ভাইরাল পোস্টটি ভুয়ো। আমাদের এলাকায় হিন্দু মহিলার ধর্ষণের কোনও ঘটনা ঘটেনি”। তিনি আরও বলেন, “যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় সহিংসতা সম্পর্কিত ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।“ 

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। ২০২০ সালে বাংলাদেশের মোংলা উপজেলায় ভুমিদস্যুর হামলায় আক্রান্ত মহিলার ছবিকে ধর্ষণের ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল করে ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে।

Avatar

Title:২০২০ সালে বাংলাদেশে ভুমিদস্যুর হামলায় আক্রান্ত মহিলার ছবিকে ভুয়ো দাবির সাথে ভাইরাল

Fact Check By: Rahul A 

Result: False


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *