
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ১২ মে থেকে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশ দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পোস্টের সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮ বাংলা’ টিভি চ্যানেলের একটি উপস্থাপনার স্ক্রিনশট দেওয়া রয়েছে। ছবিতে মমতা ব্যানার্জির ছবি রয়েছে এবং লেখা রয়েছে, “১২ ই মে থেকে খুলছে সমস্ত স্কুল, গ্রীষ্মের ছুটি হল সাময়িকভাবে স্থগিত। শিক্ষাদপ্তরকে আদেশ মুখ্যমন্ত্রীর।” পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “নিউজ আপডেট……।”
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভুয়ো এবং বিভ্রান্তিকর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির গ্রীষ্মকালীন অবকাশের স্থগিতাদেশ নিয়ে কোনও সরকারি নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।

আমাদের একজন পাঠক এই দাবির ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডোর হোয়াটসআপ নম্বরে পাঠান। ২৪ ঘন্টার মধ্যে আমরা ফ্যাক্ট চেক করে সঠিক তথ্য প্রদান করি। আপনিও আমাদের নম্বর সন্দেহজনক ছবি, ভিডিও এবং পোস্ট পাঠান এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে জানুন আসল সত্য। আমাদের নম্বর: +91 90490 53770।
তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে আমরা প্রথমে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে অনুসন্ধান শুরু করে। ফলাফলে ১২ মে স্কুল খোলা নিয়ে কোনও সরকারি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে কিনা। এই বিষয়ক কোনও খবরই আমরা খুঁজে পাইনা।
পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ শিক্ষা পর্ষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইতে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ নিয়ে জারি করা একটি নোটিশ পাওয়া যায়। এই নোটিশ লেখা রয়েছে, “আগামী কোনও নির্দেশিকা না দেওয়া পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ২ মে, ২০২২, থেকে ১৫ জুন, ২০২২, পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।”

এরপর ভাইরাল ছবিটি ভালোভাবে লক্ষ করে বুঝতে পারি সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮ বাংলা’-এর ফন্টের ধরণের সাথে এর অনেক পার্থক্য রয়েছে। এছাড়া, ভাইরাল ছবির লেখাগুলির মধ্যে ধারার অভাব এবং অসঙ্গতি স্পষ্ট। প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে ‘নিউজ ১৮ বাংলা’-এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ কেন্দ্রীক একটি ভিডিও খুঁজে পাই। ২৭ এপ্রিলের তারিখে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নবান্ন সভাঘর থেকে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ ঘোষণা করে বলছেন, “২ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত গরমের ছুটি থাকবে।”
এই ভিডিওর স্কিনশটকেই সম্পাদিত করে ভুয়ো দাবির সাথে শেয়ার করা হচ্ছে। নিচে ‘নিউজ ১৮ বাংলা’-এর উপস্থাপনার স্ক্রিনশট এবং ভাইরাল ছবির একটি তুলনা দেওয়া হল।

গ্রীষ্মকালীন অবকাশের মেয়াদ নিয়ে গত সপ্তাহে কলকাতা উচ্চ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল। এরপর ১০ মে রাজ্যের কাছে স্কুল ছুটির হলফনামা তলব করে কলকাতা হাইকোর্ট। আপাতত স্কুল ছুটির মেয়াদ কমানো বা স্থগিতাদেশ নিয়ে কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি। বিস্তারিত পড়ুন।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিস্যান্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির গ্রীষ্মকালীন অবকাশের স্থগিতাদেশ নিয়ে কোনও সরকারি নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।