নতুন ২০০ টাকার ও ১২৫ টাকার কয়েন এবং ৩৫০ টাকার ও ১০০০ টাকার নোট জারি করেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
১৯ মে তারিখে ভারত সরকার চলতি বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যেই ২০০০ টাকার নোট ব্যাঙ্কে জমা বা পরিবর্তন করিয়ে নেওয়ার ঘোষণার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াই বেশ কয়েকটি নোট ও মুদ্রা ভাইরাল হচ্ছে। দুটি কয়েন এবং দুটি নোট যার মধ্যে একটি ১০০ টাকার কয়েন, একটি ২০০ টাকার কয়েন এবং অপরপক্ষে, ৩৫০ টাকার নোট এবং ১০০০ টাকার নোট। এগুলোকে ভারতের নতুন মুদ্রা বলে দাবি করা হচ্ছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, “ ভারত বর্ষের নতুন 1000, 350 টাকার নোট ও 200,125 এর কয়েন 🇮🇳🤟💵💵💸💸💶💷💰।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি পোস্টের দাবিটি ভুয়ো। নতুন ২০০ টাকার ও ১২৫ টাকার কয়েন এবং ৩৫০ টাকার ও ১০০০ টাকার নোট জারি করেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ২০০ টাকার এবং ১২৫ টাকার কয়েন দুটি স্মারক মুদ্রা, বাণিজ্যিক কয়েন নয়।
তথ্য যাচাইঃ
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পোস্টের ছবি গুলো ভালো করে পর্যবেক্ষণ করি। স্পষ্ট লক্ষ্যনিয় যে, ৩৫০ টাকার নোটটির ’350’ লেখার ফন্টটি সাধারণ নোটের ফন্ট থেকে আলাদা যা আমাদের নোটটির উপর সন্দেহের মনোভাব তৈরি করে।
১০০০ টাকার নোটটিতে ইংরেজিতে ১০০০ লেখা থাকলেও তাতে হিন্দিতে ’দো হাজার রুপিয়ে’ অর্থাৎ ’দুই হাজার টাকা’ লেখা রয়েছে। যা নোটটির ভুয়ো হওয়ার সাক্ষ্য প্রদান করে।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দ্বারা প্রকাশিত বিভিন্ন কয়েন, নোটঃ
RBI-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় বাজারের উদ্দেশ্যে বাজারের চাহিদা অনুসারে অনেক ধরনের মুদ্রা কয়েন, নোট জারি করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, এক পয়সা, ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা, এক টাকা এবং দশ টাকা সহ বিভিন্ন মূল্যের বেশ কয়েকটি কয়েন। নোটের মধ্যে রয়েছে ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকা, ১০ টাকা, ২০ টাকা, ৫০ টাকা, ১০০ টাকা, ২০০ টাকা, ৫০০ টাকা, ১০০০ টাকা এবং ২০০০ টাকার নোট। নোটের মধ্যে, বর্তমানে প্রচলিত রয়েছে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০, ৫০০ এবং ২০০০ টাকার নোট যা এখন আমরা ব্যবহার করে থাকি। তাছাড়া কয়েনের মধ্যে, ২০১৯ সালের বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ১, ২, ৫, ১০ এবং ২০ টাকার নতুন কয়েন প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছিলেন যা এখন আমাদের চলতি বাজারে বৈধ। বিভিন্ন সময়ে প্রচলিত ভারতীয় কয়েন এবং নোটগুলোর ছবি দেখতে ক্লিক করুন যথাক্রমে এখানে, এখানে ।
আমরা কোথাও, ৩৫০ টাকার নোটের কথা উল্লেখ পাইনা। অর্থাৎ বলতে পারি যে, সরকার কখনও ৩৫০ টাকার নোট জারি করেনি।
১২৫ টাকার এবং ২০০ টাকার কয়েন-এর উৎসঃ
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের ২ সেপ্টেম্বর,২০২১, তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১২৫ টাকার একটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেছিলেন।
দি ইকোনমিক্স টাইমস-এর ১৮ এপ্রিল,২০১৬, তারিখের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের নায়ক তাত্য টোপের শাহাদাত দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী মহেশ শর্মা ২০০ টাকার একটি স্মারক মুদ্রা এবং ১০ টাকার একটি প্রচলন মুদ্রা প্রকাশ করেছেন।
অর্থাৎ, ১২৫ টাকা এবং ২০০ টাকার কয়েন দুটি বাণিজ্যিক মুদ্রা নয়, স্মারক মুদ্রা।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুয়ো। নতুন ২০০ টাকার ও ১২৫ টাকার কয়েন এবং ৩৫০ টাকার ও ১০০০ টাকার নোট জারি করেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। ২০০ টাকার এবং ১২৫ টাকার কয়েন দুটি স্মারক মুদ্রা, বাণিজ্যিক কয়েন নয়।
Title:নতুন ২০০ টাকার ও ১২৫ টাকার কয়েন এবং ৩৫০ টাকার ও ১০০০ টাকার নোট জারি করেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া
Written By: Nasim AkhtarResult: False