
উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে চলমান মহাকুম্ভ মেলার প্রেক্ষিতে সাধু সন্ন্যাসীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জের একটি ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দ উপর যোগীর পুলিশের লাঠিচার্জের ভিডিও। ভিডিওতে এক জায়গায় অনেক সাধুদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষ পিঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অবিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী সেই বিক্ষোভে প্রতিনিধি করছেন এবং পুলিশ তার উপরেও লাঠি চার্জ করছেন।
ভিডিওটির উপরে লেখা রয়েছে- মোদী-যোগীর বদান্যতায় আসলেই ‘হিন্দু খাতরে মে হে’ শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দের উপর লাঠিচার্জ করল যোগীর পুলিশ। বিজেপি শুধুমাত্র একটা রাজনৈতিক দল তারা কখনোই না – মুসলিম, শিখ, ক্রিশ্চান হিতৈষী ছিল, না হিন্দুর! এই সহজ সত্যটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন।
তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দাবিটি ঠিক নয়। ভিডিওটি ২০১৫ সালের। সেই সময় বারাণসীতে গণেশ বিসর্জন নিয়ে বিতর্কের পর পুলিশ শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দসহ অনেক সাধুর ওপর লাঠিচার্জ করেছিল। তখন রাজ্যে সমাজবাদী পার্টির সরকার তথা অখিলেশ যাদব মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
তথ্য যাচাইঃ
পোস্টের এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে ভিডিওর কি ফ্রেমগুলোকে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলে, সংশ্লিষ্ট ফেসবুক পোস্ট কেন্দ্রিক আজতাক -এর একটি ভিডিও উপস্থাপন পাওয়া যায়। ভিডিওটি ২০১৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে আপলোড করা হয়েছে এবং শিরোনামে লেখা হয়েছে,”বারাণসীতে মূর্তি বিসর্জনকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের ওপর লাঠিচার্জ।“
উপরোক্ত তথ্যকে মাথায় রেখে গুগলে কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে এই ঘটনাকে ঘিরে অনেক সংবাদ প্রতিবেদন পাওয়া যায়। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের এই প্রতিবেদন গুলো থেকে জানতে পারি, বারাণসীতে গণেশের প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে সন্নাসী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়ে গিয়েছিল। পুলিশের লাঠিচার্জে স্বামী অবিমুক্তেশ্বরানন্দসহ বহু সাধু আহত হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, বারাণসীতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক নির্দেশের পরে প্রশাসন গঙ্গা নদীতে গণেশ প্রতিমা বিসর্জনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এর পর, স্বামী অবিমুক্তেশ্বরানন্দ ও অন্য সাধু-সন্তরা প্রতিমা বিসর্জনের দাবিতে ধর্মঘটে বসেন। পরে পুলিশ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাতে তাদের সরাতে বলপ্রয়োগ করেছিল। ঘটনার সময় উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন অখিলেশ যাদব। ২০২১ সালে, অখিলেশ যাদব স্বামী অবিমুক্তেশ্বরানন্দ ও অন্যান্য সাধু-সন্তদের কাছ থেকে এই লাঠিচার্জের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যমে ফ্যাক্ট ক্রিসেণ্ডো এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ভিডিওটি ২০১৫ সালের। সেই সময় বারাণসীতে গঙ্গা নদীতে গণেশ বিসর্জন নিয়ে বিতর্কের পর পুলিশ শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দসহ অনেক সাধুর ওপর লাঠিচার্জ করেছিল। সেই সময় অখিলেশ যাদব উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

Title:শঙ্করাচার্য অবিমুক্তেশ্বরানন্দের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের ভিডিওটি সম্প্রতিক নয়, ২০১৫ সালের
Fact Check By: Nasim AkhtarResult: False