
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছয় জন মুসলিম যুবক পশ্চিম মেদিনীপুরের এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন করেছে। পোস্টে একজন মেয়ের ছবি দেওয়া রয়েছে।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “যখন সবাই এই রাজনীতির উৎসব নিয়ে ব্যস্ত ঠিক তখনই হয়ে গেল একটা নোংরা নির্মম অমানবিক কাজ 😞 শেষ করে দিল একটা তরতাজা প্রাণকে বছর কুড়ির (নির্যাতিতার নাম) তাকে ৬ মুসলিম যুবক নির্মম ভাবে অত্যাচার করে ধর্ষণ করে ঝুলিয়ে হত্যা করা হলো,আর কত? আর কত হিন্দু মেয়ের প্রাণ যাবে এভাবে?যেদিকে সবাই ব্যস্ত ভোটে জেতার উৎসব করতে ঠিক তখনই 6 জন অমানুষ তিলে তিলে শেষ করে দিল আমাদের এই বোনটিকে.কই আপনারা প্রতিবাদ করবেন না ? ও আপনাদের বাড়ি কারও সাথে হয়নি বলে তাই?তবে আমি থেমে থাকবোনা আমি তো করবোই প্রতিবাদ আমাদের আইন ব্যবস্থাকে জানাই………”।
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি বিভ্রান্তিকর। পশ্চিম মেদিনিপুর জেলার পিংলা অঞ্চলের একটি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক এবং রাজনৈতিক রং লাগিয়ে ভুয়ো দাবির সাথে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।


তথ্য যাচাই
এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে প্রথমে গুগলে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করি। ফলাফলে সংবাদমাধ্যম ‘আনন্দ বাজারে’র একটু প্রতিবেদনে ৪ মে তারিখের একটি খবর দেখতে পাই যার শিরোনামে লেখা রয়েছে “কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ, ১ মহিলা-সহ আটক ৩”। এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে পিংলা থানার জামনা এলাকায়। ৩ মে দুপুর থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বিকেলের তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পিংলা থানার পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়ে। তদন্তে নেমে পুলিশ এক মহিলা দিনমজুর-সহ দুই শ্রমিককে আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর একুশের ওই যুবতী ডেবরা কলেজের ছাত্রী ছিলেন।

এরপর ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো খড়গপুর থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়ের সাথে যোগাযোগ করে। তিনি আমাদের জানান ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনাটি সত্য কিন্তু এর সাথে কোনও রাজনৈতিক দল বা এক সম্প্রদায়ের কোনও যোগ নেই। তিনি বলেন, “নির্যাতিতা মেয়েটি কোনও রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ছিল না। এছাড়া এই ঘটনার কোনও সাম্প্রদায়িক বা জাতিগত দিক নেই। মেয়েটিকে তার বাড়ির পাশেই দুজন রাজমিস্ত্রি ধর্ষণ করে খুন করে। নির্যাতিতার পরিবার পিংলা থানায় মামলা দায়ের করে। আমাদের কাছে মেয়েটির মেডিক্যাল রিপোর্ট রয়েছে যাতে প্রমাণ হয় এটি ধর্ষণের ঘটনা। এই মর্মে আপাতত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে যার মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন মহিলা। তিনজন অভিযুক্তই তপসিলি জাতি ও তপসিলি উপজাতির অন্তর্ভুক্ত। এই তিনজন অভিযুক্তের নাম হল ছোটু মুণ্ডা, তপতী পাত্র এবং বিজয় মুর্মু।“
উপরোক্ত যুক্তি ও প্রমাণ থেকে স্পষ্টভাবে বলা যেতে পারে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা অঞ্চলের কলেজ ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার সাথে কোনও রাজনৈতিক দল বা সম্প্রদায়ের কোনও সম্পর্ক নেই।
নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল। পশ্চিম মেদিনিপুর জেলার পিংলা অঞ্চলের একটি ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক এবং রাজনৈতিক রং লাগিয়ে ভুয়ো দাবির সাথে বিভ্রান্তিকর পোস্ট ভাইরাল করা হচ্ছে।

Title:পঃ মেদিনীপুর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক ও সাম্প্রদায়িক রং চড়িয়ে ভুয়ো পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: Missing Context