
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে ধর্ষণের সাজা হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হল। ২০ সেকেন্ডের এই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলছেন “ধর্ষণ করার অপরাধে সরকার ফাঁসির সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে”। এরপর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ১০ সেকেন্ডের একটি ক্লিপ দেওয়া রয়েছে। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “এবার থেকে প্রত্যেক ধর্ষণকারীর সাজা হবে #মৃত্যুদণ্ড_ফাঁসি ✊✊🙏🙏 Video_ ©।“
তথ্য যাচাই করে আমরা দেখতে পেয়েছি এই দাবি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর। শুধুমাত্র ১২ বছরের কম বয়সী নাবালিকাদের ধর্ষণের অপরাধে ফাঁসির সাজার ঘোষণা করা হয়েছে।

তথ্য যাচাই
ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে ‘ইনভিড-উই-ভেরিফাই’ টুলে প্রথমে কয়েকটি কি-ফ্রেমে ভাগ করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করি। ফলাফলে কোনও যথাযথ সূত্র পাওয়া যায় না। এরপর ভিডিওটি দেখে বুঝতে পারি এটি সংবাদমাধ্যম ‘এবিপি নিউজ’-এর একটি ভিডিও উপস্থাপনা। প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড সার্চ করে দেখতে পাই ভিডিওটি ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি ‘এবিপি নিউজ হিন্দি’-এর ইউটিউব চ্যানেল থেকে শেয়ার করা হয়েছিল। ভিডিওর শিরোনামে হিন্দি ভাষায় লেখা রয়েছে, “রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেছেন- মোদি সরকার ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের জন্য কঠোর আইন তৈরি করেছে।“ ভিডিওতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলেন, “কোনও নাবালিকের সাথে ধর্ষণের মতো অপরাধের জন্য সরকার ফাঁসির সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।“
গুগলে কিওয়ার্ড সার্চ করে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’র একটি প্রতিবেদন (আর্কাইভ) থেকে জানতে পারি, ২০১৮ সালে ক্রিমিন্যাল ‘ল (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট সংসদে পাস হওয়ার পর রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাতে সাক্ষর দেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই সংশোধিত বিলটি পাওয়া যায়। এই বিল অনুযায়ী, ১২ বছরের কম বয়সীর ধর্ষণকারীর ন্যূনতম শাস্তি হতে পারে ১০ বছর কারাদণ্ড। আগে এই শাস্তি ছিল ৭ বছর। এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।
অন্যদিকে, ১৬ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে ধর্ষণকারীর শাস্তি ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ২০ বছর করা হয়েছে। এমনকি আমৃত্যু কারাবাসও হতে পারে। ১৬ বছরের কমবয়সী মেয়েদের গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ধর্ষণকারীদের আমৃত্যু কারাবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১২ বছরের কমবয়সী শিশুর গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ধর্ষণকারীদের মৃত্যুদণ্ড বা আজীবন কারাবাস হবে।
নতুন আইনে নাবালিকা ধর্ষণের ক্ষেত্রে তদন্তের সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে সর্বাধিক ২ মাস। বিচারও শেষ করতে হবে ২ মাসের মধ্যে। ১৬ বছরের কমবয়সীর ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ক্ষেত্রে অভিযুক্ত জামিনের আবেদন করতে পারবে না। বিলটি সম্বন্ধে আরও জানতে এখানে পড়ুন।

নিষ্কর্ষঃ তথ্য যাচাই করে ফ্যাক্ট ক্রিসেন্ডো সিদ্ধান্তে এসেছে উপরোক্ত দাবিটি ভুল ও ভিত্তিহীন। শুধুমাত্র ১২ বছরের কম বয়সী নাবালিকাদের ধর্ষণের অপরাধে ফাঁসির সাজার ঘোষণা করা হয়েছে।

Title:“প্রত্যেক ধর্ষণকারীর সাজা হবে মৃত্যুদণ্ড”- ভুয়ো দাবির সাথে বিভ্রান্তকর পোস্ট ভাইরাল
Fact Check By: Rahul AResult: Missing Context